ঐতিহ্যবাহী লা মার্টিনিয়ার বয়েজ এবং গার্লস স্কুলে সংস্কার এবং নির্মাণের কাজে অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তবে ভবনের বেশ কিছু অংশ বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। যারফলে বড়সর বিপদ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কর্তৃপক্ষ। এই অবস্থায় পড়ুয়াদের সুরক্ষায় দ্রুত সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে জরুরি ভিত্তিতে কলকাতা পুরসভার কাছে আবেদন জানালেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: হেরিটেজ কমিশনের অনুমতি ছাড়া লা মার্টিনিয়ার স্কুলে সংস্কার নয়, নির্দেশ আদালতের
জানা গিয়েছে, গ্রেড ১ হেরিটেজ তালিকাভুক্ত স্কুলগুলির ভবন মেরামত করার জন্য শুক্রবার কলকাতা পুরসভার পরিবেশ এবং হেরিটেজ বিভাগের কাছে আবেদন জানিয়েছে। লা মার্টিনিয়ারের সেক্রেটারি সুপ্রিয় ধর এই আবেদন জানিয়েছেন। জানা যাচ্ছে, গত ২১ মে বয়েজ স্কুলের সিলিং থেকে প্রায় ৪০ ফুট নিচে প্লাস্টারের একটি অংশ ধসে পড়ে নিচে। তবে সেই সময় স্কুল বন্ধ থাকায় কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি। স্কুল খোলা থাকলে সেক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ঘটতে পারত বলে আশঙ্কা কর্তৃপক্ষের। সেই যুক্তিতেই পড়ুয়াদের স্বার্থে ভবনের কিছু অংশ সংস্কারের আবেদন জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
সুপ্রিয় ধর জানান, ঐতিহ্যবাহী ভবন হলেও পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন, যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে। তাঁর বক্তব্য, ছাত্র, কর্মী এবং পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও মৌলিক কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। প্রসঙ্গত, লা মার্টিনিয়ার স্কুল ভবন ১৮০ বছরের পুরনো। বিল্ডিংকে ‘গ্রেড ১’ হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃত। এর চিহ্ন হিসাবে সেখানে ঐতিহ্যবাহী নীল ফলক বসিয়েছে কলকাতা পুরসভা। তবে ঐতিহ্যবাহী হওয়া সত্ত্বেও দুটি স্কুলে এর আগে সংস্কার করতে চেয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। পরে কলকাতা পুরসভার আধিকারিকরা স্কুল পরিদর্শনে যান। তারপরেই কাজ বন্ধের নির্দেশ দেয় কেএমসি।
পুরসভার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, ভবন যেহেতু ঐতিহ্যবাহী, তাই হেরিটেজ কমিশনের অনুমতি ছাড়া সংস্কার বা নির্মাণ কাজ করা যাবে না। এই মর্মে স্কুল কর্তৃপক্ষকে নোটিশ পাঠায় কলকাতা পুরসভা। পরে কলকাতা পুরসভার সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে লা মার্টিনিয়ার বয়েজ এবং গার্লস স্কুলের কর্তৃপক্ষ কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। যদিও কলকাতা হাইকোর্ট পুরসভার সিদ্ধান্তই বহাল রাখে। আদালত জানিয়ে দেয়, হেরিটেজ কমিশনের অনুমতি ছাড়া সংস্কার কাজ করা যাবে না। আর তারপরেই ফের পুরসভার কাছে সংস্কার করতে চেয়ে আবেদন জানালেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।