বাংলাদেশের টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে কোচবিহার জেলার ভারত–বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় হদিশ মিলল রহস্যময় এক বিশাল বাঙ্কারের। এমনিতেই কাঁটাতার পেরিয়ে অবৈধ পথে বাংলাদেশ থেকে এপার বাংলায় এবং ভারতের অন্যান্য রাজ্য অনুপ্রবেশ ঘটে চলেছে বলে অভিযোগ। বাংলাদেশের নাগরিকরা অশান্তির পরিবেশে থাকতে না পেরে এপার বাংলায় অনুপ্রবেশ করছে বলে অভিযোগ। এই আবহে বাঙ্কারের হদিশ মেলায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। এই বিশাল বাঙ্কারের কাছেই রয়েছে ভেটাগুড়ি পুলিশ ফাঁড়ি। খবর পেয়ে সেখানে আজ, শনিবার অভিযান চালায় দিনহাটা এবং সাহেবগঞ্জ থানার পুলিশের যৌথ দল।
এদিকে এই ঘটনা এখন চাউর হয়ে গিয়েছে। সামনেই উত্তরবঙ্গ সফরে আসছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার আগে এমন ঘটনা বেশ শোরগোল ফেলে দিয়েছে। এবার এই অভিযানে নেমে আগ্নেয়াস্ত্র এবং একটি পুরনো গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। আর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই বাড়ির এক সদস্যকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। এই ঘটনায় আতঙ্কে ভুগছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এখানে চাপা টেনশন কাজ করছে। এই বিষয়ে ভেটাগুড়ি–২ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান প্রিয়াঙ্কা সরকার দে বলেন, ‘পুলিশ এই বাড়িতে অভিযান চালানোর পর অনেক কিছুই জানা গিয়েছে। বাড়িতে বিশাল বাঙ্কার তৈরি করা হচ্ছিল। বাইরের লোকজনও ওই বাড়িতে আসত। যা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।’
আরও পড়ুন: ‘বিজেপি ডাহা মিথ্যাচার করছে, মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে’, রেলপ্রকল্প নিয়ে আক্রমণ কুণালের
অন্যদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, দিনহাটার ভেটাগুড়ির সিঙ্গিজানি গ্রামে টিনের বেড়া দিয়ে ঘেরা ছিল একটি বাড়ি। যার ভিতরেই ওই বিশাল বাঙ্কার মিলেছে। রাত হলেই ওই বাড়িতে বহিরাগতদের আসা শুরু হতো। এমনকী থামত নানা ধরনের বিলাসবহুল গাড়িও। এই ঘটনা এখন সামনে আসতেই রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বাহিনীর একটি বিশেষ দল এলাকায় নিয়মিত নজরদারি রাখছে। ওই বাড়িতে ঘাঁটি গেড়ে কি পাচারের কারবার চলছিল? তৈরি হচ্ছিল কোনও নাশকতার ছক? এই বিষয়ে কোচবিহারের পুলিশ কোমর বেঁধে তদন্তে নেমেছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, সম্প্রতি উত্তরবঙ্গে সফর করে গিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনও বিষয়টি সামনে আসেনি। তার উপর মুর্শিদাবাদ জেলার নানা এলাকায় হিংসার ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনার সঙ্গে এই রহস্যময় বাঙ্কারের যোগ আছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই বাড়ি ৬ মাস আগে তৈরি হয়েছিল। হোসেন আলি, তাঁর দুই ছেলে হাসান, ওসমান এবং পরিবারের আরও দু’তিনজন সদস্য এখানে থাকতেন। কোচবিহারের ঘুঘুমারি এলাকাতেও এই হোসেনদের একটি বাড়ি ছিল। মে মাসের শুরুতে গাঁজা পাচার করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে ওসমান। তারপর ওই বাড়িতে বাঙ্কারের খোঁজ নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।