তিনি কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী। বেশ পরিচিত নামও বটে। কিন্তু এবার সেই আইনজীবীকেই জেলে পাঠালেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ঢি–ঢি পড়ে যায় আদালত চত্বরে। অন্যান্য আইনজীবীরা জানতে চেষ্টা করেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর অপরাধ কী? এই প্রশ্নের উত্তর যখন জানতে পারলেন তখন পাশে থাকার পরিবর্তে মুখ বন্ধ করে সরে পড়লেন। আসলে অভিযোগটা এতটাই গুরুতর যে পাশে থাকলে চাপ বাড়বে বাকিদেরও। ওই আইনজীবী এখন প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি। রাতেই তাঁকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
এদিকে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী হয়েও আদালতের নির্দেশকে কার্যকর না করার পরামর্শ তিনি দিয়েছেন মক্কেলকে। বিচারপতিদের নামে কুৎসা করেছেন বলেও অভিযোগ। যা করা যায় না। ওই আইনজীবীর নাম অরুণাংশ চক্রবর্তী। এবার তাঁকে চার দিনের জেল খাটার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এমনটাও যে হতে পারে তা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপকের হয়ে আইনজীবী অরুণাংশ চক্রবর্তী মামলা লড়েন। সেখানে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ না মানতে ওই অধ্যাপককে পরামর্শ দেন বলে অভিযোগ। পরে এক রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলাতেও একই পদক্ষেপ করেন এই আইনজীবী বলে অভিযোগ। যার জেরেই এই জেল যাত্রা।
আরও পড়ুন: এবার নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন না বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, অন্য কেউ কি যাবে?
অন্যদিকে এই ঘটনার তথ্যপ্রমাণ হাতে পেয়ে গতকাল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দ সরাসরি আইনজীবী অরুনাংশু চক্রবর্তীকে শেরিফের মাধ্যমে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তারপরই রাতে আইনজীবীকে প্রেসিডেন্সি জেলে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। কদিন আগে কলকাতা হাইকোর্টের অন্তত দুটি বেঞ্চ পৃথক পৃথক মামলায় ওই আইনজীবীর আচরণের সমালোচনা করে তাঁকে সতর্ক করে দিয়েছিল। কিন্তু তারপরও তিনি নিজেকে পরিবর্তন করেননি। বরং একই আচরণ করে যান বলে অভিযোগ।
তাছাড়া আদালতের নির্দেশ না মানার অর্থ আদালত অবমাননা করা। সেটা একজন আইনজীবী হয়ে কেমন করে করলেন? উঠছে প্রশ্ন। এমনকী এই বিষয়ে যাবতীয় তথ্য প্রমাণ বিচারপতির কাছে পৌঁছে যায়। যার প্রেক্ষিতেই জেলে যেতে হল ওই আইনজীবী অরুনাংশু চক্রবর্তীকে। তবে এখানেই শেষ নয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তথা কর্নাটক হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কুকথা পোস্ট করেন। বিচারপতি কৌশিক চন্দ সম্পর্কে কটূ বাক্য পোস্ট করেন ওই আইনজীবী। সেটা তুলেই আদালতে হলফনামা জমা দেন উপাচার্য। তারপরও ক্ষমা চাননি আইনজীবী। তাই চারদিনের প্রতীকী জেল হল।