প্রায় ১৩ মাস ধরে উপাচার্যহীন অবস্থায় রয়েছে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় (এনবিইউ)। তা নিয়ে এমনিতেই সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল পড়ুয়া থেকে শুরু করে শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মীদের। তাছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজে সমস্যা হচ্ছিল। তারইমধ্যে এবার ইস্তফা দিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার। এর ফলে কার্যত অভিভাবকহীন হয়ে পড়ল বিশ্ববিদ্যালয়। জানা যাচ্ছে, গত বুধবার ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ইস্তফা দিয়েছেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদ ফাঁকা হয়ে গেল। এমন অবস্থায় দ্রুত উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রার নিয়োগ না হলে সমস্যা আরও বাড়বে বলেই মনে করছে শিক্ষামহল।
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাতভর হাতির তাণ্ডব, ভাঙল প্রাচীর, গেট
জানা গিয়েছে, বেতন এবং ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কর্মীরা আন্দোলনের নামেন চলতি সপ্তাহে। তাঁরা ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের দ্বারস্থ হন। পরে রেজিস্ট্রার নূপুর দাস অব্যাহতি চেয়ে গত বুধবার ইস্তফা দিয়েছেন। তিনি ইস্তফাপত্র উচ্চ শিক্ষা দফতরে পাঠিয়ে দিয়েছেন। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ে যুগ্ম-রেজিস্ট্রার হিসেবে রয়েছে স্বপন রক্ষিত। তবে তাঁকে অতিরিক্ত দায়িত্ব এখনও দেওয়া হয়নি বলে তিনি জানান। পাশাপাশি এ বিষয়ে উচ্চশিক্ষা দফতরকে অবগত করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি গুরুত্বপুর্ণ পদ ফাঁকা হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়তে চলেছেন পড়ুয়ারা। আগামিদিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা কোন পথে হাঁটবে তা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন তাঁরা। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির অভিযোগ, রাজ্যপাল ও রাজ্যের সংঘাতের পর থেকে এই অচলাবস্থা শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। ফলে আগামিদিনে কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় চলবে, তা নিয়ে তাঁরা উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।
আন্দোলনরত কর্মীদের দাবি তাঁদের আন্দোলনের সঙ্গে রেজিস্ট্রারের ইস্তফার কোনও যোগ নেই। অন্যদিকে, নূপুর দাস জানান, শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রসঙ্গত, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই আর স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ হয়নি। এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষবার সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়েছিল ২০১৭ সালে। ফলে তার পর থেকে কেউই এখনও পর্যন্ত ডক্টরেট ডিগ্রি পাননি। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মী নিয়োগেও সমস্যা হচ্ছে। এমন অবস্থায় উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় দ্রুত স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের দাবি জানাচ্ছেন, শিক্ষক অশিক্ষক কর্মীরা।