যে বিশেষ নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর বর্তমানে কোনও অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি বা কার্যকর নেই, সেই বিশেষ ব্যবস্থা থেকেই অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার! রাজ্যের এই আচরণে বিস্ময় প্রকাশ করেছে আদালত। একইসঙ্গে, রাজ্য সরকার কোন যুক্তিতে এই আবেদন করেছে, সেই বিষয়ে আগামিকালই (বুধবার - ৭ মে, ২০২৫) তাদের অবস্থান হাইকোর্টে স্পষ্ট করতে বলা হয়েছে।
উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি চলাকালীন মঙ্গলবার (৬ মে, ২০২৫) এই ঘটনা ঘটেছে। জানা গিয়েছে, উচ্চ প্রাথমিকের শারীরশিক্ষা এবং কর্মশিক্ষা বিষয়ের চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে যাঁদের নাম ওয়েটিং লিস্ট-এ ছিল, তাঁদের নিয়োগ করার জন্য ২০২২ সালে সুপার নিউমেরারি বা অতিরিক্ত শূন্যপদ সৃষ্টি করে রাজ্য সরকার।
এই পদ সৃষ্টি নিয়ে নানারকম বিতর্ক রয়েছে। এমনকী, এর আগে এই পদ সৃষ্টির সিদ্ধান্তের উপর সাময়িক অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল আদালত। এদিকে, গত এপ্রিল মাসে সুপ্রিম কোর্ট দুর্নীতির অভিযোগে এবং যোগ্য ও অযোগ্য চাকরিপ্রাপকদের আলাদা করতে না পেরে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর তৈরি ২০১৬ সালের প্রায় পুরো প্যানেল বাতিল করে দেয়। তাতে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক, শিক্ষিকা, অশিক্ষক কর্মচারী ও শিক্ষাকর্মী চাকরি হারান। কিন্তু, শীর্ষ আদালত সরকারের সুপার নিউমেরারি পদ সৃষ্টির বিষয়টির উপর কোনও হস্তক্ষেপ করেনি।
এদিকে, ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে যে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছিল, তার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। অন্যদিকে, এই একই বিষয়ে পুনরায় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করার দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন এই মামলার মূল মামলাকারী। মঙ্গলবার সেই আবেদন শোনার পর বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু জানান, বিষয়টি লিখিতভাবে জানাতে হবে। তারপরই আদালত তা বিবেচনা করে দেখবে।
অন্যদিকে, রাজ্য সরকার তার আবেদনে দু'টি বিষয় উল্লেখ করে। প্রথমত - সুপারনিউমেরারি পদ সৃষ্টির বিষয়টি থেকে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হোক। দ্বিতীয়ত - তারাই আবার আদালতকে জানায়, এই বিষয়ে এর আগে যে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল, তার মেয়াদ ফুরিয়েছে! এবং নতুন করে তার মেয়াদ বাড়ানো হয়নি!
এমন আবেদনে বিস্মিত বিচারপতি রাজ্যের কাছে জানতে চান, এই দাবির যৌক্তিকতা কী? রাজ্য সরকার নিজেই তো বলছে, ওই নির্দিষ্ট বিষয়ে যে স্থগিদেশ ছিল, তার মেয়াদ ফুরিয়েছে এবং নতুন করে তা বৃদ্ধি করা হয়নি। তাহলে রাজ্য সরকার কোন স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করতে বলছে? বুধবার ফের এই মামলার শুনানি হবে।