২৯ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টেনেছেন এ আর রহমান ও তাঁর স্ত্রী সায়রা বানু। বানুর আইনজীবী বন্দনা শাহ এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এই দম্পতি তাঁদের সম্পর্কের দূরত্ব অনুভব করেছিলেন, যার জেরে এই কঠিন সিদ্ধান্ত। রহমানের ডিভোর্সের কয়েকঘণ্টার মধ্যেই বিচ্ছেদের ঘোষণা সারেন তাঁর সহযোগী, বেসিস্ট মোহিনী দে।
২৯ বছর বয়সী মোহিনী দে, অস্কার-জয়ী সুরকারের সাথে বিশ্বব্যাপী ৪০টিরও বেশি শো করেছেন। ইনস্টাগ্রামে তাঁর স্বামী মার্ক হার্টসুচের সাথে মোহিনী ডিভোর্সের ঘোষণা সারতেই দুই বিচ্ছেদের মধ্যে কোনও যোগ আছে কিনা তা ভাবিয়ে তোলে নেটিজেনদের। অনেকেরই ধারণা হয়ত, হাঁটুর বয়সী বঙ্গললনার রূপের মোহেই ঘর ভাঙছে রহমানের।
দুই ডিভোর্সে সম্পর্ক টেনে একদিকে সায়রার প্রতি সহমর্মিতা জানান, ওদিকে মোহিনীকে তুলোধনা শুরু করেন। বিদ্রুপ,কটাক্ষে জর্জরিত বাঙালি সঙ্গীতশিল্পী। এবার তাঁর ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙল। ইনস্টাগ্রামে তিনি রহমানের সঙ্গে সম্পর্কের জল্পনা উড়িয়ে লেখেন, ‘গত কয়েক ঘণ্টা ধরে প্রচুর ফোন পাচ্ছি। সাক্ষাৎকারের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছেন তাঁরা। আমি জানি তাঁরা কী জানতে চান। অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে সকলকে মানা করছি। কারণ গুজবে পাত্তা দেওয়ার মতো সময় আমার নেই। এই ধরনের গুজবে কান দিয়ে নিজের শক্তি ক্ষয় করতে চাই না। আশা করব, আমার ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে গোপনীয়তা রক্ষা করবেন।’
হ্যাঁ, সরাসরি রহমানে নাম না নিলেও, তাঁর সঙ্গে রহমানের সম্পর্কের ভাবনা পুরোটাই কল্পনাপ্রসূত তা স্পষ্ট করে দিলেন মোহিনী। রহমানের আইনজীবী বন্দনা শাহ আগেই জানিয়েছেন, দুই ডিভোর্সের ঘটনায় কোনও যোগ নেই। তিনি বলেন, ‘মোহিনী যে ডিভোর্সের আবেদন করেছে, তার সঙ্গে এই ডিভোর্সের (রহমান ও বানু) কোনো সম্পর্ক নেই। এই দুটো স্বতন্ত্র ঘটনা’।
সায়রা বানু ও এ আর রহমানের বিচ্ছেদের ঘোষণা
মঙ্গলবার রাতে রহমান ও বানু এক যৌথ বিবৃতিতে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মিসেস সায়রা এবং তার স্বামী জনাব এ আর রহমান জোর দিয়ে বলছেন যে তারা ব্যথা ও যন্ত্রণা থেকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মিসেস সায়রা এবং তার স্বামী জনাব এ আর রহমান এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে জনগণের কাছ থেকে গোপনীয়তা এবং বোঝার অনুরোধ করেছেন, কারণ তারা তাদের জীবনের এই কঠিন অধ্যায়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন’।
বিচ্ছেদের কথা জানান মোহিনী দে
রহমানের ২৯ বছর বয়সী বেসিস্ট মোহিনী দে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরদিনই জানান, তিনি ও তার স্বামী সংগীতশিল্পী মার্ক হার্টসুচও আলাদা হয়ে গেছেন। দে লিখেছেন, ‘ভারাক্রান্ত হৃদয়ে মার্ক ও আমি ঘোষণা করছি, আমরা আলাদা হয়ে গেছি। প্রথমত, আমাদের বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের প্রতি প্রতিশ্রুতি হিসাবে, এটি আমাদের মধ্যে একটি পারস্পরিক বোঝাপড়া। যদিও আমরা দুর্দান্ত বন্ধু রয়েছি, আমরা উভয়ই সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমরা জীবনে বিভিন্ন জিনিস চাই….’।
এ আর রহমান ও সায়রা বানুর বিয়ে
১৯৯৫ সালে বিয়ে করেন এ আর রহমান ও সায়রা বানু। ২০১২ সালে সিমি গ্রেওয়ালের শোতে একটি সাক্ষাত্কারে, রহমান বিয়ে সম্পর্কে তাঁর চিন্তাভাবনা এবং একজন সাধারণ সঙ্গীর জন্য তাঁর ইচ্ছা সম্পর্কে খোলামেলা কথা বলেছিলেন। তিনি লেখেন, 'সত্যি কথা বলতে, পাত্রী খোঁজার সময় আমার ছিল না। 'রঙ্গিলা', 'বম্বে'-র মতো ছবিই করছিলাম। আমি খুব ব্যস্ত ছিলাম, কিন্তু আমি জানতাম যে বিয়ে করার জন্য এটিই সঠিক সময়। আমার বয়স তখন ২৯। আমি মাকে বললাম- আমাকে একটা পাত্রী খুঁজে দাও। রহমান ব্যাখ্যা করতে গিয়েছিলেন যে কীভাবে তাঁর মা একটি সুফি মাজারে যাওয়ার সময় সায়রার বোনের সাথে দেখা হয়েছিল, সেখান থেকেই বিয়ের কথা পাকা হয়।