ভিন রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা লাগাতার হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে বিজেপি শাসিত ওড়িশার কটকে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বাংলার শ্রমিকরা। এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই তীব্র নিন্দা করেছেন। এবার বাংলা ভাষাভাষী শ্রমিকদের উপর ধারাবাহিক হেনস্তার ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলকাতা হাই কোর্টে দায়ের হল তিনটি মামলা। এই মামলাগুলি দায়ের করেছেন হেনস্তার শিকার শ্রমিকদের পরিবার ও একাধিক সংগঠন। (আরও পড়ুন: মহিলাদের ভাতা বৃদ্ধির ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর,কবে থেকে অ্যাকাউন্টে ঢুকবে বাড়তি টাকা)
আরও পড়ুন: কেরলে মর্মান্তিক ঘটনা, ঘুমের মধ্যে দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু বাংলার ৩ শ্রমিকের
আদালত সূত্রে খবর, তিনটি ভিন্ন ধরনের মামলা হয়েছে। এগুলি হল, হেবিয়াস কর্পাস মামলা, রিট পিটিশন এবং একটি জনস্বার্থ মামলা। তবে তিনটি মামলার পেছনের উদ্দেশ্য একটাই ওড়িশায় আটকে পড়া পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিকদের দ্রুত নিরাপদে ফিরিয়ে আনা এবং তাঁদের ওপর হওয়া বেআইনি আচরণের বিরুদ্ধে বিচার নিশ্চিত করা। হেনস্তার ঘটনাগুলিকে কেন্দ্র করে সবচেয়ে বেশি শোরগোল পড়েছে বাংলা ভাষাকে কেন্দ্র করে। অভিযোগ উঠেছে, শুধুমাত্র বাংলায় কথা বলার কারণে অনেক শ্রমিককে বাংলাদেশি বলে সন্দেহ করা হয়েছে, তাঁদের গালিগালাজ করা হচ্ছে এবং শারীরিক নিগ্রহের মুখেও পড়তে হয়েছে।
এই বিষয়ে রাজ্যসভার সাংসদ ও পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম জানান, এটা শুধু লজ্জার নয়, আইনের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন। বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশি বলে সন্দেহ করে হেনস্তা করা হচ্ছে। এটা কখনও মেনে নেওয়া যায় না। তাই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন যাতে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের করেছে ‘পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্য মঞ্চ’ নামে একটি সংগঠন। হেবিয়াস কর্পাস মামলার মাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, যাঁরা এখনও ওড়িশায় আটকে রয়েছেন, তাঁদের খোঁজ নিয়ে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করুক রাজ্য ও কেন্দ্রীয় প্রশাসন। (আরও পড়ুন: বকেয়া ডিএ-র চাপেও বড় পদক্ষেপ করতে পারে রাজ্য, বেতন কাঠামোয় আসতে পারে বদল)
আরও পড়ুন: ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে সংযোজন, নয়া বিজ্ঞপ্তি জারি সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশনের
এছাড়াও চার জন ব্যবসায়ী হাইকোর্টে আলাদা মামলা দায়ের করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, কটকের মাহাঙ্গা এলাকায় তাঁদের ব্যবসা থাকা সত্ত্বেও, তাঁদের বাংলাদেশি বলে অপবাদ দিয়ে হেনস্তা করা হয়েছে। বাধ্য হয়ে তাঁদের বাংলায় ফিরে আসতে হয়েছে। ফলে আর্থিকভাবে তারা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। সেই কারণেই তাঁরা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার এই ইস্যুতে কলকাতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়, যেখানে পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবার এবং সংশ্লিষ্ট সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই আইনি লড়াইয়ের রূপরেখা তৈরি হয় এবং মামলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।এই ঘটনাগুলি সামনে আসার পর উদ্বেগ ছড়িয়েছে সমাজের বিভিন্ন স্তরে।