পূর্ব কলকাতা জলাভূমিকে সংরক্ষণ করে তার উন্নয়ন ঘটাতে উদ্যোগী হল কলকাতা পুরসভা। জলাভূমির পরিবেশকে অক্ষুণ্ণ রেখেই সেখানে ইকো-ট্যুরিজম ও স্থানীয় জীবিকার সুযোগ বাড়ানোর লক্ষ্যে রাজ্য সরকারের কাছে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে পুরসভা। শুক্রবার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, জলাভূমির সৌন্দর্যায়ন, ঐতিহ্যবাহী মৎস্য ও চিংড়ি চাষ পুনরুজ্জীবিত করার মতো একাধিক পরিকল্পনা রয়েছে ওই প্রস্তাবে।
আরও পড়ুন: পূর্ব কলকাতার জলাভূমিতে অবৈধ নির্মাণ রুখতে কমিটি গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের
মেয়র বলেন, ‘জলাভূমিকে আরও আকর্ষণীয় ও উন্নয়ন গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। এতে একদিকে যেমন অবৈধ দখল রোধ হবে, তেমনই প্রাকৃতিক ভারসাম্যও বজায় থাকবে।’ তবে পুরসভা জলাভূমির নিয়ন্ত্রণ হাতে নিতে চায় কি না এই প্রশ্নে হাকিম স্পষ্ট জানিয়ে দেন, পূর্ব কলকাতা জলাভূমি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ-ই আগের মতোই পুরো অঞ্চল পরিচালনা করবে। পুরসভার ভূমিকা শুধুই উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনে সহায়তা করা।
উল্লেখ্য, প্রায় ১২,৫০০ হেক্টর জায়গা জুড়ে থাকা এই জলাভূমি এলাকাকে ২০০২ সালে রামসার সাইটের মর্যাদা দেওয়া হয়। বিশ্বের বৃহত্তম প্রাকৃতিক বর্জ্যজল পরিশোধন ব্যবস্থার অন্যতম এই জলাভূমি প্রতিদিন প্রায় ৯০ কোটি লিটার বর্জ্যজল প্রাকৃতিক উপায়ে শোধন করে। এখানকার মাছ ও সবজির চাষ হাজার হাজার মানুষের জীবিকার উৎস। নানা প্রজাতির মাছ ও পাখির বিচরণের কারণে এলাকাটি জীববৈচিত্র্যের ক্ষেত্রেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
পড়ুন: হাইকোর্টের নির্দেশ পেয়েই পদক্ষেপ, পূর্ব কলকাতা জলাভূমিতে ভাঙা হল বেআইনি নির্মাণ
কিন্তু বিগত কয়েক বছরে বেআইনি নির্মাণ, দূষণ ও শহরের সম্প্রসারণের কারণে জলাভূমির অস্তিত্ব পড়েছে বিপদের মুখে। এই প্রেক্ষিতে পুরসভার প্রস্তাবে জনসচেতনতা বৃদ্ধির দিকেও জোর দেওয়া হয়েছে। মেয়রের কথায়, জলাভূমিকে রক্ষা করতে স্থানীয় মানুষদেরও সম্পৃক্ত করতে হবে। উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষা সমানভাবে জরুরি। প্রস্তাবটি এখন প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। বাস্তবায়নের জন্য রাজ্য পরিবেশ দফতর এবং পূর্ব কলকাতা জলাভূমি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ-এর অনুমোদন পাওয়াটাই এখন পরবর্তী ধাপ। তবে পরিবেশ-বান্ধব উন্নয়ন ও স্থানীয় মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের এই পরিকল্পনাকে ঘিরে ইতিমধ্যেই আশাবাদী প্রশাসন।