সুখকে এখন আমরা নগদ টাকা বা মজুত করতে চাওয়া পুঁজির মতো ভাবি। কিন্তু সুখ কি চাল, ডালের মতো মজুত করার জিনিস? সারাক্ষণ সুখী থাকার এই ক্লান্তিকর চেষ্টা কি আমাদের ক্ষতি করছে?
আমরা সবাই সুখী থাকতে চাই। কিন্তু সারাক্ষণ সুখের অনুভূতি ধরে রাখার চেষ্টা করা আসলে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। একটি সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, অতিরিক্ত সুখের অনুভূতি অনুসন্ধান করা অনেক সময় হতাশা, উদ্বেগ এবং একাকীত্বকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
এই গবেষণা করা হয়েছে টরন্টো স্কার্বরো বিশ্ববিদ্যালয় এবং সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে। পর্যবেক্ষণ করে তাঁরা দেখছেন, যারা সবসময় সুখী থাকার চেষ্টা করেন, তাদের মধ্যে মানসিক চাপ বেশি থাকে। কারণ তাঁরা নিজেদের নেতিবাচক অনুভূতিগুলি দমন করার চেষ্টা করেন এবং যেকোন খারাপ অনুভূতিকে অস্বীকার করেন। কিন্তু জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত কখনও সুখের হতে পারে না। সুখের মতো দুঃখ, হতাশা বা রাগের মতো অনুভূতিকেও সাবলীলভাবে গ্রহণ করা জরুরি, এটাই বাস্তব।
গবেষকরা বলছেন, সুখী থাকার চেষ্টা তখনই ক্ষতিকর হয়ে ওঠে, যখন মানুষ এটা বাধ্যতামূলক মনে করে অর্থাৎ যদি কেউ মনে করে যে তাকে সবসময় ভালো অনুভব করতেই হবে, তাহলে সে নিজের আবেগগুলোর প্রতি আরও কঠোর হয়ে ওঠে এবং স্বাভাবিক আবেগপ্রবণতাকে দমন করতে চায়। এই প্রবণতা একসময় মানসিক স্বাস্থ্যকে নষ্ট করে দেয়।
তবে সুখী থাকা মোটেও খারাপ কিছু নয়। বরং গবেষকরা বলছেন যে, সুখের প্রতি নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ মানুষকে বুঝতে হবে যে সুখী থাকা জীবনের একমাত্র লক্ষ্য নয়, জীবনের অন্য অনুভূতিরও একটা ভূমিকা আছে। যারা তাঁদের আবেগকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করেন তারা মানসিকভাবে বেশি সুস্থ থাকেন।
আরও পড়ুন - Optical Illusion: ছবিতে তাকিয়ে প্রথমে মুখ দেখলেন না ঘোড়া? উত্তরটাই বলে দেবে আপনার ব্যক্তিত্ব কেমন
সুতরাং, আমাদের উচিত সুখকে গুরুত্ব দেওয়া, তবে সেটা বাধ্যতামূলক কিছু হিসেবে না দেখে জীবনের অংশ হিসেবে গ্রহণ করা। এতে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং প্রকৃত অর্থে স্বতঃস্ফূর্ত সুখের অনুভূতিকে বেশি উপভোগ করতে পারব।