যাঁরা কলকাতার বাইরে থাকেন, তাঁরা কলকাতায় বেড়াতে এলে আর কোথাও না যান, ভিক্টোরিয়া দেখতে যাবেনই। শীতকালে শহর কলকাতায় ঘুরতে যাওয়া মানেও ভিক্টোরিয়ার দিকে হাঁটা দেওয়া।
সাদা রঙের এই সৌধটির চেহারার সঙ্গে কমবেশি সব কলকাতাবাসীই পরিচিত। দেশের বেশির ভাগ মানুষের চোখেই কলকাতা মানেই সাদা মার্বেলের দেওয়ালের এই প্রাসাদসম বাড়িটি। কিন্তু জানেন কি এক সময়ে এর রং ছিল কালো?
দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময়ে এই ঘটনাটি ঘটে। সে সময়ে কলকাতা ছিল ব্রিটিশ এবং আমেরিকার সেনাদের বড় ঘাঁটি। তারই মধ্যে ১৯৪২-৪৩ সাল নাগাদ কলকাতায় জাপানি সেনার আক্রমণ শুরু হয়। ১৯৪২ সালে কলকাতায় বোমা পড়ে। খিদিরপুরের ডকের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এই পুরো আক্রমণটাই চালানো হয়েছিল জাপানি বিমানবাহিনীর তরফে। দিনের আলোয় ব্রিটিশ সেনারা যুদ্ধ সামলে নিতে পারত। কিন্তু রাতের অন্ধকারে জাপানি বিমান হানা হয়ে উঠত ভয়ঙ্কর।
জাপানিদের আক্রমণের প্রধান লক্ষ্যই ছিল শহরের বাড়ি, স্থাপত্য, রাস্তাঘাট। আর তাই রাতে ‘ব্ল্যাক আউট’-এর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় শহর বাঁচাতে। বাড়িঘরের আলো যেমন নেভানো থাকত, তেমনই রাস্তাঘাটের আলো নিভিয়ে দেওয়া হত সন্ধ্যার পর থেকেই।
কিন্তু ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়্যালের কী হবে? চাঁদের আলোয় ভিক্টোরিয়ার সাদা মার্বেল মারাত্মক উজ্জ্বল হয়ে উঠত। সেই কারণেই ১৯৪৩ সালে ব্রিটিশ সরকার সিদ্ধান্ত নেয়— এই সৌধটিকে কালো রং করে দেওয়া হবে।

ব্রিটিশরা চায়নি, কোনও ভাবেই এই কথা জাপানিদের কানে যাক। সেই কারণে কালো ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়্যালের কোনও ছবিও তুলতে দেওয়া হয়নি সেই সময়ে। যদিও তার পরেও একটি-দু’টি ছবি থেকে যায়। হালে ইন্টারনেটের দৌলতে তেমনই কয়েকটি ছবি আবার সামনে এসেছে। পুরনো কলকাতার কয়েকটি ছবির মধ্যে পাওয়া গিয়েছে কালো ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়্যালের ছবিও।