মন্দারমণির হোটেল থেকে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা আবুল নাসার দেহ উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় রহস্য দানা বেঁধেছে। কারণ ওই হোটেলে দু’জন মহিলার উপস্থিতি জানতে পেরেছে পুলিশ। তাও আবার আবুল নাসারের ঘরেই ছিলেন তাঁরা। তাঁর এক বন্ধু–সহ বান্ধবীদের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে হোটেলে ঢুকেছিলেন। হোটেলের দু’টি ঘর ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। তবে পুলিশ জানতে পেরেছে, দুই যুগল আদতে দম্পতিই নয়। স্ত্রী পরিচয় দিয়ে হোটেলে ওঠা দুই মহিলা আসলে আবুল এবং তাঁর বন্ধুর বান্ধবী। তৃণমূল কংগ্রেস নেতার পরিবারের পক্ষ থেকে খুনের অভিযোগ করা হয়েছে।
পুলিশ অবশ্য অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে। আবুল জমিজমা বিষয়ক ব্যবসা করতেন। বাড়ি থেকে মন্দারমণি আসার সময় বলে এসেছিলেন ব্যবসার কাজে বাইরে যাচ্ছেন। শনিবার পুলিশের পক্ষ থেকে আবুল নাসারের মৃত্যুর খবর পায় পরিবার। মৃত এই তৃণমূল কংগ্রেস নেতার স্ত্রী আমডাঙার আদাহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান। বৃহস্পতিবার হুল্লোড় করে কাটান তাঁরা। শুক্রবার আবুল নাসারের বন্ধুর সঙ্গে থাকা বান্ধবী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই হোটেল থেকে চলে যান। আবুলের সঙ্গে তাঁর মহিলা সঙ্গী এবং আবুলের বন্ধু হোটেলেই থেকে যান। শুক্রবার সন্ধ্যায় আবুল তাঁর বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে বন্ধুর ঘরে মদ্যপান করেন। সেখানেই ঝামেলা লাগে বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: ব্লক সভাপতির নেতৃত্বে মন্ত্রীর মুখে কাগজ সেঁটে দিলেন তৃণমূল কর্মীরা, হাড়োয়ায় হট্টগোল
সকলেই মদ্যপান করেন। তারপর রাতে সঙ্গী মহিলা শৌচাগারে চলে যান। তিনি ফিরে আবুলের ঘরে ঢুকতে গিয়ে দেখেন ঝুলন্ত আবুলের দেহ। আতঙ্কিত হয়ে আর এক বন্ধুকে খবর দেন। তখন তাঁরা দু’জনে মিলে দেহটিকে বিছানায় নামিয়ে হোটেল কর্মীদের খবর দেন। আর শনিবার সকালে পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। কিন্তু বিষয়টি যে এত সহজ নয় তা পুলিশ বুঝতে পারছেন। তাই এই কথার উপর ভিত্তি করতে চাইছেন না তদন্তকারীরা। তৃণমূল কংগ্রেস নেতার রহস্যমৃত্যুর পরই পুলিশ গ্রেফতার করে আবুলের বান্ধবী এবং অন্য বন্ধুকে। ওই বান্ধবীকে দফায় দফায় জেরা করে পাকড়াও করা হয় আর এক যুবককে। তিনি ওই বান্ধবীর প্রেমিক বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এই জেরা পর্বে ত্রিকোণ সম্পর্ক উঠে এসেছে।
এছাড়া পুলিশের জেরায় ধৃত যুবতী স্বীকার করেন, একাধিক পুরুষের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আছে। ধৃত যুবক তাঁর প্রেমিক এবং তৃণমূল কংগ্রেস নেতার ভাল বন্ধু। ধৃত যুবক আবুল নাসারের সঙ্গে ওই যুবতীর পরিচয় করিয়ে দেয়। ওই যুবতীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে আবুলের। প্রেমিক এটা জানতে পেরেই কি খুন? উঠছে প্রশ্ন। তবে এই বিষয়ে বারাসতের তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা আবুলের বন্ধু ফইদুল রহমান বলেন, ‘আমার বন্ধুর সঙ্গে যে যুবতী ছিলেন তিনি আবুলের পার্টনারের এক ভাগ্নি। তাঁকে নিয়ে আবুলের মন্দারমণিতে আসার পিছনে অন্য কোনও কারণ থাকতে পারে।’