গত মার্চে ছাত্র ধর্মঘটের সময় মেদিনীপুরে পুলিশ লক আপে এআইডিএসও’র নেত্রীদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগে মান্যতা দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এই মামলায় রায়দান করেন। তাতে ছাত্র নেত্রী সুশ্রীতা সোরেন, সুচরিতা দাস-সহ অন্যদের মেদিনীপুর মহিলা থানায় নিয়ে গিয়ে অত্যাচারের অভিযোগ প্রমাণিত বলেই উল্লেখ করা হয়েছে। এই ঘটনার তদন্তে সিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। একইসঙ্গে, মেদিনীপুর জেলা মানবাধিকার কোর্টে পরবর্তী বিচার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বেল্ট দিয়ে মারধর ওসির, গায়ে দেওয়া হয় মোমবাতির ছ্যাঁকা, গুরুতর অভিযোগ AIDSO-র
আইজি মুরলীধর শর্মার নেতৃত্বে সিট গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশে বলা হয়েছে, সিট দু’টি ক্ষেত্রেই তদন্ত করবে। গত মার্চে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়ির নিচে এক পড়ুয়ার চাপা পড়াকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল রাজনীতি।তার প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই। ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস চত্বরে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। আর ওইদিনই ধর্মঘট দমন করার জন্য পুলিশের বিরুদ্ধে নির্মমভাবে অত্যাচারের অভিযোগ ওঠে। মেদিনীপুর মহিলা থানার বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর অত্যাচারের অভিযোগ তোলেন এআইডিএসও’র চার নেত্রী।
তাঁরা অভিযোগ করেন, মোমবাতি দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়ার পাশাপাশি বেল্ট দিয়ে মারধর করেন খোদ ওসি। এছাড়াও, মেরে থানায় পুঁতে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। এমনকী জাত তুলেও গালিগালাজ করেন। আরও অভিযোগ ছিল, থানায় যেসব এলাকা সিসিটিভির নজরদারির বাইরে ছিল সেখানে নিয়ে গিয়ে তাঁদের উপর অত্যাচার চালানো হয়। সুশ্রীতার অভিযোগ ছিল, সিসিটিভির নজরদারির বাইরে থাকা একটি ঘরে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে বলা হয়। আর তারপরেই শুরু হয় নির্মম অত্যাচার। সেই ঘটনায় তদন্তের দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়।
মঙ্গলবার হাইকোর্ট রায়ে জানিয়েছে, কুহেলি সাহা নামে একজন কনস্টেবল থানার ভিতরে সুচরিতাকে চুলের মুঠি ধরে ধাক্কা মেরেছেন। অত্যাচারের প্রমাণ সিসিটিভি ফুটেজে আছে। এছাড়াও, ডিএসপির রিপোর্ট আদালতের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়নি। বলা হয়েছে, রিপোর্টে সেখানে ভুল তথ্য আছে। সিসিটিভি ফুটেজ বিকৃত করা হয়েছে বলেও জানানো হয়। হাইকোর্ট জানিয়েছে, হিউম্যান রাইটস কোর্টে মামলার বিচার হবে। তারপরে অভিযুক্ত অফিসারদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হবে তা বিবেচনা করবে হাইকোর্ট। রায়ে আরও বলা হয়েছে, সুশ্রীতার ক্ষেত্রে ভুয়ো অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট তৈরি করা হয়েছে।