চিকিৎসায় গাফিলতি এবং পরিকাঠামোগত ত্রুটির অভিযোগে নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিল প্রশাসন। দুইটি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে নেওয়া হয়েছে পৃথক ধরনের পদক্ষেপ। এর মধ্যে একটির ক্লিনিক সিল করে দেওয়া হয়েছে আর অন্যটিকে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মালদা জেলা প্রশাসন এই পদক্ষেপ করেছে।
আরও পড়ুন: মৃত্যুর পরেও রোগীকে ৩ দিন রেখে টাকা আদায় নার্সিংহোমের, তদন্তে স্বাস্থ্য বিভাগ
ঘটনাগুলি ঘটেছে চাঁচল ২ ব্লক এবং কালিয়াচক ১ ব্লকে। মঙ্গলবার চাঁচল ২ ব্লকের প্রশাসনিক দল একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে অভিযান চালিয়ে সেটি বন্ধ করে দেয়। অন্যদিকে, কালিয়াচকের আরেকটি ক্লিনিককে জরিমানা করা হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৫ মে চাঁচলের নার্সিংহোমটিতে হঠাৎ পরিদর্শনে গিয়েছিল একটি সরকারি দল। সেখানেই ধরা পড়ে একাধিক গাফিলতির চিত্র।
স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, অপারেশন থিয়েটারে ব্যবহৃত সিরিঞ্জ ও অন্যান্য সামগ্রী পড়ে থাকতে দেখা যায়। অথচ সেখানে সম্পূর্ণ জীবাণুমুক্ত পরিবেশ বজায় রাখা বাধ্যতামূলক। এছাড়া, ক্লিনিকটি সিজারিয়ান ডেলিভারি করে, অথচ সেখানে কোনও শিশু বিশেষজ্ঞ ছিলেন না। এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
শুধু তাই নয়, ভর্তি রেজিস্টার এবং অন্যান্য নথিপত্রেও একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়ে। এরপর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে একটি নোটিশ পাঠানো হয় এবং জরিমানাও ধার্য করা হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ নির্দেশ অমান্য করে নার্সিংহোম চালিয়ে যেতে থাকে। এই অবস্থায়, রোগীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ক্লিনিকটি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চাঁচল ২ ব্লকের বিডিও শান্তনু চক্রবর্তীর নেতৃত্বে প্রশাসনিক দল গিয়ে নার্সিংহোমটি সিল করে দেয়।
অন্যদিকে, কালিয়াচক ১ ব্লকের একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসার গাফিলতির জেরে এক মহিলা ও এক নবজাতকের মৃত্যু হয়। আরও একটি শিশুর মৃত্যুর পেছনেও অবহেলার অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নার্সিংহোমটির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন। জানা গিয়েছে, সোমবার ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে নোটিশ পাঠিয়ে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের এক আধিকারিক জানান, কর্তৃপক্ষকে ডেকে পাঠিয়ে অভিযোগের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাদের উত্তর সন্তোষজনক ছিল না। তাই জরিমানা করা হয়েছে। যদি ভবিষ্যতে আরও অভিযোগ আসে, তাহলে এই নার্সিংহোমও বন্ধ করে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে।