বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দঢ়। এই প্রবাদটির এবার সরাসরি প্রমাণ মিলল বাংলার মাটিতে। আর যে ঘটনা সামনে এল তাতে বেশ শোরগোল পড়ে গেল। উত্তরবঙ্গের কৃষি আধিকারিক যে গাড়ি ব্যবহার করেন সেই গাড়িটিই এখন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। ওই গাড়িতে সরকারি বোর্ড ও নীলবাতি লাগানো আছে। যে গাড়িতে করে সপরিবারে পিকনিকে পৌঁছে গেলেন চালক। কৃষি আধিকারিককে অন্ধকারে রেখে চালক মেজাজের সঙ্গে গাড়ি চালালেন। সবার সামনে প্রমাণ করতে চাইলেন তিনি সরকারি অফিসের বিশেষ কেউকেটা। কিন্তু সেটি প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল শুরু জলপাইগুড়িতে। যা নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? সাধারণতন্ত্র দিবসের দিন পিকনিক চলছিল জলপাইগুড়ির বোদাগঞ্জের গৌরীকোণ এলাকায়। আর সেই পিকনিকে এসে হাজির হন সরকারি বোর্ড ও নীলবাতি লাগানো গাড়ি নিয়ে ওই চালক। ওই গাড়ি দেখে প্রথমে অনেকেই ভাবেন, উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত কৃষি আধিকারিক শুভেন্দু মণ্ডল সেখানে এসেছেন। কিন্তু পরে এক ব্যক্তিকে তাঁরা দেখতে পান সেখানে নিজেকে জাহির করছেন। পরিবার এবং বন্ধুদের সামনে নিজের দর বাড়াচ্ছেন। খোঁজ নিতেই সামনে আসে ওই গাড়িতে করে পিকনিকে এসেছেন কৃষি আধিকারিকের চালক বাপ্পা সরকার। এমনকী সপরিবারে এসেছেন। এই ঘটনা চাউর হতেই হতবাক সকলেই।
আরও পড়ুন: অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করলেন শুভেন্দু অধিকারী, দীর্ঘক্ষণ দু’জনের কী কথা হল?
তারপর ঠিক কী ঘটল? কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা ঘটনার কথা ওই কৃষি আধিকারিকের কানে তুলে দেন। তখন পরদিন ওই কৃষি আধিকারিক শুভেন্দু মণ্ডলকে জিজ্ঞাসা করেন গতকাল কোথায় ছিলেন? গাড়ির চালক বাপ্পা সরকার পিকনিকের কথা বললেও তিনি যে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেছেন সেটা বেমালুম চেপে গেলেন। তখন সেটা প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন কৃষি আধিকারিক। এই পরিস্থিতিতে পড়ে জলপাইগুড়িতে কৃষি দফতরে আধিকারিকের সামনে ভুল স্বীকার করে নেন বাপ্পা সরকার। তবে তিনি জানান, গাড়িটি তাঁর নিজের। কৃষি দফতরে ভাড়া খাটে। কিন্তু নীলবাতি বা সরকারি বোর্ড কোনওটিই তাঁর নয়। সাধারণতন্ত্র দিবসে ওই গাড়িতে করে সপরিবারে পিকনিক করতে যান বাপ্পা সরকার। ওই গাড়িতে কৃষি আধিকারিক ছিলেন না। বাপ্পা সরকার বলেন, ‘গাড়ি থেকে সরকারি বোর্ড ও নীলবাতি খুলে নেওয়া হয়নি।’
কিন্তু যদি কোনও খারাপ কিছু ঘটত তাহলে সরকারের নাম জড়িয়ে যেত। বদনাম হতো রাজ্য সরকারের। এই কাজ আক্ষরিক অর্থে অপরাধ। এমনকী তার জন্য শাস্তিও পেতে হতে পারে। এই বিষয়ে অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর অফ এগ্রিকালচার নর্থ বেঙ্গল রিজিয়নের দফতরের হেড ক্লার্ক জয়দেব রায়ের বক্তব্য, ‘বিষয়টি আমাদের কানে এসেছে। ওই গাড়ির চালককে সতর্ক করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এমন কাজ না করে তার জন্য সতর্ক করা হয়েছে। কৃষি আধিকারিককে সবটা জানানো হয়েছে। নিজের ভুল স্বীকার করেছে চালক।’