প্রয়াগরাজে চলছে মহাকুম্ভ মেলা। এই উপলক্ষে পুণ্যস্নান করতে সেখানে জড়ো হয়েছেন লক্ষ লক্ষ ভক্ত। তবে বুধবার ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে সেখানে। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩০ জনের। এছাড়াও আহত হয়েছেন ৬০ জন। তার মধ্যে বাংলার পুণ্যার্থীরাও রয়েছেন। এখনও পর্যন্ত জানা যাচ্ছে, কুম্ভ মেলায় বাংলার ৬ জন পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও, ৮ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
আরও পড়ুন: 'দেহের অবস্থা ভালো না', মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু কলকাতার বৃদ্ধারও
সূত্রের খবর, মৃত ৬ জনের মধ্যে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে পদপিষ্ট হয়ে এবং বাকি ৩ জন ভিড়ে যে অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছেন। এদিকে, মৃতদের পরিবারের অভিযোগ, ডেথ সার্টিফিকেট না দিয়েই এবং দেহ ময়নাতদন্ত না করেই পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ও নিখোঁজদের তালিকা তৈরি করে উত্তরপ্রদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করবে নবান্ন। ইতিমধ্যেই মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ উত্তরপ্রদেশ সরকারের সঙ্গে কথা বলছেন বলে জানা গিয়েছে।
প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভে বাংলার মৃতদের তালিকা:
সরকারি সূত্রে জানা যাচ্ছে, মৃতদের মধ্যে রয়েছেন কলকাতার অশ্বিনীনগরের প্রৌঢ়া বাসন্তী পোদ্দার (৬৫)। এছাড়াও রয়েছেন- শিলিগুড়ির অমল পোদ্দার (৫৪), কোচবিহারের মিঠুন শর্মার (৩২), মালদার বৈষ্ণবনগরের অমিয় সাহা (৩৩)। তিনি প্রাথমিক শিক্ষক ছিলেন। এছাড়াও, মৃতদের মধ্যে রয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির ঊর্মিলা ভুঁইয়া (৭৫) এবং পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ার বাসিন্দা বিনোদ রুইদাস।
এখনও অবধি বাংলার কারা কারা নিখোঁজ?
মৃত্যুর খবর সামনে আসতেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের নিখোঁজ পুণ্যার্থীদের খবর আসতেও শুরু করে। এর মধ্যে রয়েছেন- শিলিগুড়ির সমরনগরের বাসিন্দা পুতুল রায় (৪৭)। তাঁর শেষ অবস্থান ছিল কুম্ভমেলা প্রাঙ্গণের সেক্টর ২২। পদপিষ্টের ঘটনার পর থেকে তাঁর আর কোনও খবর পাওয়া যায়নি। ফোনও বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি পরিবার। তবে তিনি যাদের সঙ্গে গিয়েছিলেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও রয়েছেন কলকাতার রিজেন্ট পার্কের তেঁতুলতলার বাসিন্দা সুবীর নস্কর (৪৫)। তিনি কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দার সঙ্গে সেখানে গিয়েছিলেন। পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনার পর থেকেই তিনি নিখোঁজ রয়েছেন।
নিখোঁজদের মধ্যে রয়েছেন উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়ার হাতিপা এলাকার বৃদ্ধা সুনীতি মল্লিক। জানা গিয়েছে, স্নান সাড়ার পর তিনি হুড়োহুড়ির মধ্যে পড়ে যান। তার পর থেকে আর খোঁজ নেই তাঁর। রয়েছেন, জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকের শিকারপুরের বাসিন্দা রেসমেইত মেহের। বছর ৫৫ এর ওই প্রৌঢ়া তাঁর স্বামীর সঙ্গেই।গিয়েছিলেন। দুজনেই মঙ্গলবার স্নান সাড়েন। তবে পদপিষ্ট হওয়ার পর তাঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।
এছাড়াও, মালদার ইংরেজবাজারের বুড়াবুড়িতলার অনিতা দাস (৬৫) নিখোঁজ রয়েছেন। তিনি ১৫ জনের একটি দলের সঙ্গে কুম্ভ মেলায় যান। পদপিষ্টের পর তাঁকে পাওয়া যায়নি। একইভাবে কোচবিহারের মাথাভাঙার বাসিন্দা মহেন্দ্র বর্মনও নিখোঁজ রয়েছেন। প্রতিবেশীদের সঙ্গে তিনি কুম্ভ মেলায় গিয়েছিলেন। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির জুনপুটের বাসিন্দা পবনকুমারেরও (৭০) কোনও খবর পাওয়া যাচ্ছে না পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনার পর। নদিয়ার কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা সুমিত্রা পালের খোঁজ পাওয়া যাওয়া যাচ্ছে না। তিনি হুড়োহুড়ির পর থেকে নিখোঁজ। এদিকে, পূর্ব মেদিনীপুরে হলদিয়ার নকুল মান্না প্রথমে নিখোঁজ ছিলেন। পরে জানা যায়, তিনি একাই ট্রেনে ফিরছেন। তবে মৃত্যু বা নিখোঁজের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।