'সাইবার জালিয়াতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে ই-জিরো এফআইআর।' সাইবার-নিরাপদ ভারত গড়ার লক্ষ্যে নতুন ব্যবস্থা চালু করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনস্থ ইন্ডিয়ান সাইবারক্রাইম কো-অর্ডিনেশন সেন্টার ‘ই-জিরো এফআইআর’ নামে এই নতুন ব্যবস্থা চালু করেছে। যাতে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে অপরাধীদের ধরা যাবে।
এক্স বার্তায় অমিত শাহ বলেছেন, ‘১০ লক্ষ টাকার ঊর্ধ্বে প্রতারণার অভিযোগ এনসিআরপি বা ১৯৩০ নম্বরে জানানো হলে, তা সাইবার আর্থিক অপরাধ স্বয়ংক্রিয় ভাবে এফআইআর-এ রূপান্তরিত হবে। এই নতুন ব্যবস্থা দ্রুত তদন্ত প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং সাইবার অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা সম্ভব হবে। খুব শীঘ্রই এটি গোটা দেশে চালু হবে। নরেন্দ্র মোদী সরকার একটি সাইবার-নিরাপদ ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্যে দেশের সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করছে।'
এই প্রসঙ্গে একজন আধিকারিক জানিয়েছেন, আঞ্চলিক এক্তিয়ার নির্বিশেষে, স্বয়ংক্রিয় ভাবে এফআইআর জারি করার প্রক্রিয়া শীঘ্রই সমগ্র দেশে সম্প্রসারিত করা হবে। এই উদ্যোগের ফলে ক্ষতিগ্রস্তদের হারানো অর্থ সহজেই পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে। এবং সাইবার অপরাধীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। এটি সম্প্রতি চালু হওয়া ফৌজদারি আইনের আওতায় রয়েছে।আরেক আধিকারিক বলেন, 'নতুন এই ব্যবস্থায় আই৪সি-এর এনসিআরপি সিস্টেম, দিল্লি পুলিশের ই-এফআইআর সিস্টেম এবং এনসিআরবি-এর ক্রাইম অ্যান্ড ক্রিমিনাল ট্র্যাকিং নেটওয়ার্ক অ্যান্ড সিস্টেমের একীকরণ অন্তর্ভুক্ত। এখন,এনসিআরপি বা ১৯৩০ নম্বরে করা ১০ লক্ষ টাকার বেশি আর্থিক প্রতারণার অভিযোগগুলি স্বয়ংক্রিয়ভাবে দিল্লির ই-ক্রাইম থানায় একটি জিরো এফআইআর নথিভুক্ত করা হবে। এটি তাৎক্ষণিকভাবে আঞ্চলিক সাইবার ক্রাইম থানায় পাঠানো হবে। অভিযোগকারীরা তিন দিনের মধ্যে সাইবার ক্রাইম থানায় যেতে পারবেন এবং জিরো এফআইআরকে নিয়মিত এফআইআরে রূপান্তর করতে পারবেন।'
দিল্লি পুলিশ এবং আই৪সি ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার ধারা ১৭৩ (১) এবং ১(ii)-এর নতুন বিধান অনুসারে মামলা নিবন্ধনের জন্য একটি প্রক্রিয়া চালু করার জন্য একসঙ্গে কাজ করেছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'এনসিআরপিতে রিপোর্ট করা নির্দিষ্ট সাইবার অপরাধের অভিযোগে ই-এফআইআর নিবন্ধন এবং সংশ্লিষ্ট থানায় স্থানান্তরের জন্য দিল্লির ই-ক্রাইম পুলিশ স্টেশনকে অবহিত করা হয়েছে।'
গত বছরই অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, সাইবার জালিয়াতি মোকাবেলায় আগামী পাঁচ বছরে ৫,০০০ কমান্ডো মোতায়েন করা হবে।আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স আসার পর থেকে বাড়তে থাকা সাইবার জালিয়াতি রোধে এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।তিনি অনলাইন স্ক্যাম এবং জালিয়াতি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করতে, মোট চারটি বড় প্ল্যাটফর্ম লঞ্চও করেছিলেন। সেগুলি হল- সাসপেক্ট রেজিস্ট্রি, সাইবার কমান্ডো, সাইবার ফ্রড মিটিগেশন সেন্টার (সিএফএমসি) এবং সমন্বয় প্ল্যাটফর্ম।
উল্লেখ্য, সাইবার স্ক্যাম বা অনলাইনে প্রতারণার ঘটনা আজকাল প্রায়শই হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনও কেউ না কেউ অনলাইন প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। কখনও মোবাইল হ্যাক করে সমস্ত ডেটা চুরি করে নিচ্ছে হ্যাকাররা। আবার কখনও মেসেজ পাঠিয়ে সেকেন্ডে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খালি করে দিচ্ছে। আর যাঁরা সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন, তাঁদের সাহায্য করার জন্য ভারত সরকারের তরফে সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টাল চালু করা হয়েছে। যেখানে সাইবার প্রতারণা এবং অন্যান্য সাইবার অপরাধের অভিযোগ জানানো যাবে। আর এই অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সহজেই অভিযোগ দায়ের করে সাহায্য প্রার্থনা করা যাবে।