বড়দিনে ৪টি ছবি। যদিও মূল লড়াইটা হচ্ছে 'খাদান' বনাম 'সন্তান'-এর। মুক্তির আগে থেকেই দুটি ছবির মধ্যে টক্কর বেঁধে গিয়েছে। শুরুতে 'খাদান' নিয়ে দেবকে আক্রমণের অভিযোগ ওঠে 'সন্তান' পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। পরে রাজ যদিও জানান, তিনি কোনও ছবিকে আক্রমণ করেননি। তবে রাজ থামলেও রবিবারই দেবকে আক্রমণ করে বসেন 'সন্তান' অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী। আর তাতে ফের চটে যান দেব অনুরাগীরা। এদিকে এই লড়াইয়ে সৃজিত মুখোপাধ্যায়, বিরসা দাশগুপ্তদের পাশে পেয়েছেন সুপারস্টার দেব। এবার 'খাদান' বনাম 'সন্তান'-এর এই লড়াই নিয়ে Hindustan Times Bangla-র কাছে মুখ খুললেন টলিপাড়ার আরও এক প্রযোজক রানা সরকার।
ঠিক কী বলেছেন রানা?
রানা সরকার বলেন, ‘আমার মনে হয়না, কেউ কাউকে সত্যিই আক্রমণ করার জন্য কিছু করছেন বলে। এটা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ। প্রতিযোগীতামূলক জায়গা থেকে হয়ত কেউ কিছু বলে থাকতে পারেন। আর শো পাওয়া নিয়ে যে দ্বন্দ্ব চলছে, সেটা চিরকালের লড়াই। যেহেতু এতগুলো বাংলা ছবি রিলিজ করছে, সেখানে শো আর হলের সংখ্যা কিন্তু লিমিটেড। তাই অল্প বিস্তর সমস্যা তো হবেই। সকলেই আশা করেন, যে তাঁরাই সবথেকে বেশি হল পাবেন, তবে সেটা তো আর সম্ভব নয়। তার উপর একসঙ্গে ৩-৪টে ছবি রিলিজ হয়েছে। তাই সকলকে ভাগ করে দিতেই হবে।’
রানার কথায়, এক্ষেত্রে 'খাদান', ‘সন্তান’-এর এক ধরনের স্কেল, বাকি ২টো ছবির আরেক ধরনের স্কেল, তার সঙ্গে আবার পুষ্পা চলছে। হল পাওয়া, শো পাওয়া নিয়ে সমস্যা হবেই। তবে তারমধ্যেও যেটা ভালো বিষয় সেটা হল সবকটা ছবি থেকেই দর্শকদের ভালো প্রতিক্রিয়া আসছে।'
রানা বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘কোনও ছবি যদি ভালো হয়, তাহলে তার ১টা শো হলেও দর্শক আসবে, ১০টা শো হলেও দর্শক আসবে। আর ভালো ব্যবসা করলে শো পরে বাড়িয়েও দেওয়া হয়। রেষারেষির কোনও মানে নেই। হ্য়াঁ, কেউ একটু বেশি শো পেলে, ব্যবসাতে খানিকটা প্রভাব পড়বেই, তাতে কিছু করার নেই। সকলকে একটু লজিক্যালি ভাবতে হবে। এটা বুঝতে হবে, যাঁরা হল মালিক, তাঁরাও কিন্তু আখেরে ব্যবসায়ী। তবে আমার যেটা মনে হয়, বাংলায় বাংলা ছবিকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া উচিত। আর এবার বড়দিনে মুক্তি পাওয়া ছবির ক্ষেত্রে বাংলা ছবি যথেষ্ঠ প্রাধান্য পেয়েছে। খুব খারাপ কিছু কিন্তু হয়নি।’
আরও পড়ুন-'তুমি না গেলে আমি আর বাড়ি থেকেই বের হব না…’, শাশুড়িমাকে কেন এমন বলেছিলেন শুভশ্রী?

'খাদান'-'সন্তান' তারকাদের মধ্যে আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণ চলছে, সেটা নিয়ে কী বলবেন? যেমন রাজ বলেছেন, রবিবার ঋত্বিকও আক্রমণ করেছেন। অপরপক্ষ থেকেও পাল্টা উত্তর আসছে…
উত্তরে রানা বলেন, ‘যেকোনও ধরনের মন্তব্য, আলোচনা সবই আসলে প্রচারের স্বার্থে। আজকাল মানুষ ভালো কথা শোনে না, খারাপ কথাই বেশি আলোচনা হয়। আমার তাই মনে হয়,যা হচ্ছে সবই আসলে প্রচার। তবে কেউ ব্যক্তিগতভাবে কিছু মন্তব্য করলে, সেটা তো কেউ আটকাতে পারেন না। আমাদের দেশে সকলেরই কথা বলার অধিকার আছে। সেখানে ঋত্বিক নিজের ভাবনা থেকে হয়ত কিছু লিখেছেন। তাতে কিছু লোক সমর্থন, কিছু লোক বিরোধিতা করেছেন। আর দেব যেহেতু সুপারস্টার, তাই ওঁর ফ্যান-ফলোয়িং বেশি, তাই প্রতিবাদটাই বেশি হয়েছে। তবে এটাও বোঝা দরকার এটা আসলে ফিল্ম স্লেজিং। সবাই সবাইকে করছে, আর তাতে দর্শক উৎসাহিত হচ্ছেন। লোকজন ছবির কথা জানছেন। আসলে খারাপ কথা বলেও যদি কিছু মানুষকে হলে আনা যায়, তাহলেও তো লাভ। পুরোটাই প্রচারের স্বার্থে।’
প্রযোজক ফের বলেন, 'একটা উদাহরণ দি, মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ম্য়াচে হলে কেউ কি কখনও বলন আমরা হেরে যাব? এই ম্য়াচের আগে গালাগালিও চলতে থাকে। তবে জিতবে একটা দলই। মাঠে এই যে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান দর্শকরা মারামারি করেন, ম্যাচটা শেষ হলেই সেটা শেষ হয়ে যায়। তার বেশি কিছু নয়। এটাও তেমনই বিষয়। এবার ঋত্বিক যদি দেবকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলে থাকেন, সেটা উচিত কি উচিত নয়, তা আমি বলতে পারি না। তবে এতে কারোরই কোনও ক্ষতি হবে না। দুটো ছবিই চলছে। এখানে কোনও ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। দেব-ঋত্বিকও একসঙ্গে বহু কাজ করেছে। ওদের বন্ধুত্বই আছে। বাকিটা সবই প্রচারের স্বার্থে।