এখন লোকসভা নির্বাচনের মরশুম চলছে। ষষ্ঠ দফার নির্বাচন নিয়ে প্রস্তুতি চলছে। এই আবহে বাঁকুড়ায় সভা করতে এসে বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকারকে তুলোধনা করেন। এখন সুভাষবাবু কখনও জুতো পালিশ, কখনও জল ঢেলে স্নান করিয়ে দেওয়ার মতো কাজ করে ভোট ভিক্ষা করছেন। এই সব ঘটনাকে শুধুই ভোট পাওয়ার কৌশল বলে তীব্র আক্রমণ করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনী প্রচারে আসেন বাঁকুড়ার শালতোড়া ও সোনামুখীতে। এখানেই বিজেপি প্রার্থীর প্রচারকে কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন, ‘আমি মায়েদের বলব, এদের দিয়ে শৌচালয়টাও পরিষ্কার করাবেন। দরকার হলে ডেকে বাড়ির বাসন মাজাবেন।’
বাঁকুড়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী। তিনি সংগঠনের নেতা। মানুষের জন্য কাজও করেছেন সারা বছর। সেখানে বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকারকে দেখা যায়নি পাঁচ বছরে পাঁচ সপ্তাহ। তাই অভিষেকের বক্তব্য, ‘গত পাঁচ বছরে পাঁচ সপ্তাহ সময়ও বাঁকুড়া লোকসভার কোনও বিস্তীর্ণ এলাকায়, বুথে, বিধানসভায়, অঞ্চলে, গ্রামে দেখা যায়নি। এখন ভোট ঘোষণা হতেই সুভাষ সরকার এসে কারও জুতো পালিশ করছে, কারও গায়েরে জল ঢেলে দিচ্ছে। আমি মায়েদের বলব, এদের দিয়ে শৌচালয়টাও পরিষ্কার করাবেন। দরকার হলে ডেকে বাড়ির বাসন মাজাবেন। আর এদেরকে বলবেন, ভোট তোমাকেই দেব। আপনাকে ঠকিয়েছে পাঁচ বছর। আপনিও এদের ঠকাবেন। আর আগামী ২৫ তারিখ এক নম্বর বোতাম টিপে অরূপ চক্রবর্তীকে ভোট দিয়ে প্রতিশোধ নেবেন।’
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে উপকৃত ৮৫.৬ শতাংশ মহিলা, সমীক্ষায় উঠে এল বড় মাপের তথ্য
বিজেপি নেতারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ করতে চায়। এই কথা বলে সরব হন অভিষেক। তাঁর কথায়, ‘আমি প্রকাশ্যে বলছি, সুভাষ সরকার আর বিজেপির কোনও নেতা, বুথের কর্মী যখন আপনার বাড়িতে ভোট চাইতে যাবে, এদের গাছে বেঁধে জিজ্ঞেস করবেন তোমাদের নেতারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ করতে চায়, তোমাদের দলের অবস্থান কী? আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, যতদিন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা এই বাঁকুড়া জেলায় থাকবে এবং অরূপ চক্রবর্তী জিতবে, যতদিন বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসের মা–মাটি–মানুষের সরকার থাকবে আপনার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার আমরা বুক দিয়ে আগলে রাখব, কেউ স্পর্শ করতে পারবে না এটা আমাদের গ্যারান্টি।’
এই বিষয়টি চাউর হতেই বেশ চাপে পড়ে যান বাঁকুড়ার বিদায়ী সাংসদ সুভাষ সরকার। তিনি পাল্টা বলেন, ‘যাঁদের সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে রক্ষাকবচ নিতে হয় তাঁদের মুখে এসব কথা মানায় না। যখন তখন জেলের ভাত খাওয়ার জন্য তৈরি থাকতে হবে। মানুষ যেভাবে সাড়া দিচ্ছে তাতেই বুঝিয়ে দিচ্ছে যে, ডাক্তার সরকার তাদের সুখে দুঃখে সবসময় থেকেছে। আমার আগের ১৬ বারের জয়ী সাংসদদের কাজের যোগফলের থেকে আমি বেশি কাজ করেছি।’