হাওড়া শহরের একেবারে প্রাণকেন্দ্রে সাত সকালে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। হাওড়া পুরনিগমের ভিতরে আচমকাই ভেঙে পড়ল একটি গাছ। তাতে চাপা পড়ে মৃত্যু হল দুজনের। মৃত দুজনই হলেন পুরসভার কর্মী। মৃতদের নাম উমেশ মাহাতো ও নুর মহম্মদ। এরমধ্যে একজন পুরসভার স্থায়ী এবং অপরজন অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় পুরসভা চত্বরে। (আরও পড়ুন: 'কার্তিক মহারাজ পালিয়ে যাচ্ছেন কেন? এইটুকু দম হল না যে আমি যাই?')
আরও পড়ুন: কেরলে মর্মান্তিক ঘটনা, ঘুমের মধ্যে দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু বাংলার ৩ শ্রমিকের
জানা যাচ্ছে, ঘটনাটি ঘটে সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ অফিস খোলার সময়। পুর প্রশাসকের দফতরের সামনে একটি ইউক্যালিপটাস গাছ ছিল। সেটিই হঠাৎ ভেঙে পড়ে। নিচে দাঁড়িয়ে ছিলেন উমেশ ও নুর। প্রচণ্ড শব্দে গাছটি তাঁদের উপর ভেঙে পড়ে। পালানোর সুযোগ পাননি তাঁরা। দু’জনেই ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুরসভার ভিতরে থাকা সহকর্মীরা ছুটে আসেন। খবর পেয়ে পৌঁছয় হাওড়া থানার পুলিশ। পুরসভার উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে আসেন। দুই মৃতদেহ উদ্ধার করে পাঠানো হয় হাওড়া জেলা হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য। (আরও পড়ুন: চিন্ময় প্রভুকে 'শেষ' করে দেওয়ার চক্রান্ত করছে ইউনুসের পুলিশ? এল নয়া আপডেট)
এদিকে দুর্ঘটনার পর থেকেই উঠছে একাধিক প্রশ্ন। পুরসভার অনেক কর্মীই জানিয়েছেন, ইউক্যালিপটাস গাছটি দীর্ঘদিন ধরেই হেলে পড়েছিল। ঝুঁকে ছিল রাস্তায়। বিষয়টি নাকি কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হয়েছিল, কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাঁদের দাবি, যদি গাছটি অফিস টাইমে ভেঙে পড়ত, তাহলে আরও বড় বিপর্যয় ঘটতে পারত। এদিন অফিস শুরু হওয়ার ঠিক আগেই গাছটি পড়ে যাওয়ায় বড়সড় ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া গেল। বিষয়টি ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোরও শুরু হয়েছে।
স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ , এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়। পুরসভার গাফিলতিতেই দু’জন কর্মীর জীবন গেল। বহুবার বলা হয়েছিল গাছটি বিপজ্জনক, কিন্তু কেউ কান দেয়নি। ঝড়-বৃষ্টি কিছুই হয়নি, তবু গাছ ভেঙে পড়ল—এর দায় কে নেবে? তাই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। হাওড়া পুরনিগমের পুর প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান সুজয় চক্রবর্তী বলেন, গাছটি সম্পূর্ণ সজীব ছিল। ভাঙার কোনও সম্ভাবনা দেখা যায়নি, তাই কাটা হয়নি। এটা নিঃসন্দেহে দুঃখজনক ও আকস্মিক। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে।দুর্ঘটনার পর বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা দ্রুত গাছ কাটার কাজে নেমে পড়েন।