হুগলির বৈদ্যবাটিতে গভীর রাতে ঘটল ভয়ঙ্কর ঘটনা। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় এক যুগলকে। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় দু’জনেরই। এই রহস্যজনক মৃত্যুকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। জানা যাচ্ছে, দুজনেই ঘরের ভিতর থেকে আর্তনাদ করছিলেন। তাঁদের ‘বাঁচাও, বাঁচাও’ চিৎকার শুনে দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকেন প্রতিবেশীরা। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: হাসপাতালে ঢুকে প্রকাশ্যে প্রেমিকার গলা কাটল যুবক! প্রকাশ্যে হাড়হিম ভিডিয়ো
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম মণীশ ভাদুড়ি (৩৫) ও অপর্ণা মাঝি (৩২)। সীতারাম বাগান এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন তাঁরা। যদিও মণীশের আদি বাড়ি ওই এলাকারই রাজার বাগানে। প্রায় ছ’বছর ধরে একসঙ্গে থাকতেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, মণীশ একটি ঢালাই কারখানায় কাজ করতেন। অপর্ণা বাড়ি বাড়ি কাজ করতেন পরিচারিকা হিসেবে। দু’জনেই প্রতিদিন সকালে কাজে বেরিয়ে রাত করে ফিরতেন। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, মণীশ মাঝেমধ্যেই মদ্যপ অবস্থায় থাকতেন। সেই নিয়ে প্রায়শই অশান্তি হত তাঁদের মধ্যে।
বুধবার রাত তিনটে নাগাদ হঠাৎ বিকট চিৎকার শুনে মণীশদের বাড়ির সামনে ছুটে যান আশপাশের লোকজন। প্রতিবেশীদের বক্তব্য, চিৎকার শুনেই তাঁর বাড়িতে যান তাঁরা। সেখানে গিয়ে দেখেন রক্তে ভেসে যাচ্ছে ঘর। দু’জনেই গুরুতর জখম অবস্থায় ছটফট করছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ আর বাড়ির লোকজনকে খবর দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে বৈদ্যবাটি থানার পুলিশ এসে দু’জনকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় শ্রীরামপুর মহকুমা হাসপাতালে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। গুরুতর রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয় তাঁদের। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, ঘরেই নিজেদের মধ্যে কোনও কারণে বচসা থেকে হাতাহাতি হয় এবং তাতেই ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ঘটে এই ভয়াবহ ঘটনা। তবে পুলিশ এখনও নিশ্চিত নয়। কারণ, তৃতীয় কেউ ওই রাতে ঘরে প্রবেশ করেছিল কি না, সে বিষয়েও সন্দেহ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থলে যান চন্দননগর পুলিশের ডেপুটি কমিশনার অর্ণব বিশ্বাস। তিনি বলেন, দেখে মনে হচ্ছে এটা শুধু ঘরোয়া অশান্তির ফল নয়। বাইরে থেকেও কেউ জড়িত থাকতে পারে। বিষয়টি খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ফরেন্সিক তদন্তের জন্যও বিশেষজ্ঞ দল ডাকা হয়েছে।