শিবম প্রতাপ সিং
রবিবার সকালে ওড়িশার পুরীতে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা চলাকালীন পদপিষ্ট হয়ে কমপক্ষে তিনজন নিহত এবং অন্তত ৫০জন আহত হওয়ার ফলে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়। রাজ্য সরকার গোটা ঘটনার জন্য জনসাধারণের কাছে ক্ষমাও চায়।
বার্ষিক ধর্মীয় শোভাযাত্রার গুরুত্বপূর্ণ স্থান গুন্ডিচা মন্দিরের কাছে এই ঘটনা ঘটে, যেখানে ভোরের দিকে প্রচুর লোক জড়ো হয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি এই দুর্ঘটনার পরে একটি জরুরি বৈঠকে উপস্থিত হন এবং দুর্ঘটনার পুরো দায় নেন। তিনি জনগণকে আশ্বস্ত করেছেন যে একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চলছে এবং যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ধরনের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে তা নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ভক্তদের নিরাপত্তা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
ওড়িশার পুরীতে পদপিষ্টের ঘটনা। তারই ১০টি পয়েন্ট জেনে রাখুন এবার।
রবিবার ভোর চারটে নাগাদ গুন্ডিচা মন্দিরের কাছে রথে তিন দেবদেবীর মূর্তি উন্মোচনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন বহু ভক্ত। এই ঘটনার আগে, চরমালা কাঠ বোঝাই দুটি ট্রাক (পবিত্র বলে বিবেচিত) সারধবালি অঞ্চলে প্রবেশ করে, যার ফলে ভক্তদের ভিড়ের মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, ভিআইপিদের জন্য নতুন প্রবেশদ্বার তৈরি করে ভিড় ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা রয়েছে। এক বাসিন্দা জানান, দূর থেকে সাধারণ মানুষকে মন্দির থেকে বেরিয়ে যেতে বলা হয়েছিল।
কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, প্রবেশদ্বার থেকেই লোকজন বের হতে শুরু করায় সেখানে ভিড় বাড়তে থাকে। রাজ্যের আইনমন্ত্রী হরিচন্দন জানিয়েছেন, ওড়িশা পুলিশের ডিজি পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনার তদন্ত করছেন। ওড়িশার ডিজিপি ওয়াইবি খুরানিয়া জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে তাঁর ডেপুটিদের নিয়ে বৈঠক করেছেন বলে এক আধিকারিককে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে সংবাদসংস্থা পিটিআই। মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনার জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষমা চেয়েছেন এবং ভগবান জগন্নাথ দেবের ভক্তদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। মৃতদের পরিবারপিছু ২৫ লক্ষ টাকা করে সাহায্যের কথাও ঘোষণা করেছেন তিনি। পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় পুরীর ডিসিপি বিষ্ণু চরণ পতি এবং পুলিশ কমান্ড্যান্ট অজয় পাধিকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। কালেক্টর সিদ্ধার্থ এস সোয়াইন এবং এসপি বিনিত আগরওয়ালকে বদলি করা হয়েছে।
পদপিষ্ট হওয়ার পর পুরী জগন্নাথ মন্দিরের প্রবীণ দৈতপতি সেবায়েত রামকৃষ্ণ দাস মহাপাত্র নিহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং ভক্তদের সুরক্ষার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন যে পুরীর পদপিষ্ট হওয়া একটি ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে বড় ইভেন্টের জন্য সুরক্ষা, ভিড় ব্যবস্থাপনা অবশ্যই যথাযথভাবে প্রস্তুত এবং পর্যালোচনা করা উচিত। পুরীর গজপতি মহারাজা দিব্যসিংহ দেব পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি ওড়িশা সরকারকে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনার দ্রুত ও বিস্তৃত তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।