সংবিধান গৃহীত হওয়ার ৭৫ বছর পূর্তি নিয়ে সংসদে আলোচনা চলাকালীন অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে বড় দাবি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। সংসদে দাঁড়িয়ে মোদীর দাবি, সংবিধান পরিষদ চেয়েছিল দেশের নির্বাচিত সরকার যাতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করে। তিনি বলেন, 'বিআর আম্বেদকর দৃঢ়ভাবে সব ধর্মের জন্যেই ইউসিসি কার্যকরের পক্ষে ছিলেন।' তাঁর সরকার যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার পক্ষে কাজ করছে, তাও জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। (আরও পড়ুন: গ্রেফতার ৪, সুনামগঞ্জে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনায় অবশেষে পদক্ষেপ পুলিশের)
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ভোট কবে? বড় পরিকল্পনার কথা ইউনুসের উপদেষ্টার মুখে, মন্তব্য ভারত নিয়েও
মোদী বলেন, 'ইউনিফর্ম সিভিল কোড - এই বিষয়টির ওপর নজর ছিল সংবিধান পরিষদের। ইউসিসি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেছিলেন সংবিধান পরিষদের সদস্যরা। এই ইস্যুতে আলোচনার পরে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, যে সরকারই নির্বাচিত হোক না কেন, তারা দেশে ইউসিসি বাস্তবায়ন করলে ভালো হবে।' তিনি আরও বলেন, 'সুপ্রিম কোর্টও বহুবার বলেছে দেশে ইউসিসি আনতে হবে। সংবিধানের চেতনা এবং সংবিধান প্রণেতাদের ইচ্ছার কথা মাথায় রেখে আমরা ধর্মনিরপেক্ষ নাগরিক আইনের জন্য আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।'
এদিকে গতকাল সংসদে মোদী আরও বলেন, 'ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ ব্যবস্থা এড়িয়ে যেতে হবে। তবে যাঁরা এত দিন সংরক্ষণের সুবিধা পেয়ে এসেছেন, তাঁরা যাতে সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হন, তা নিশ্চিত করতে হবে।' মোদীর কথায়, 'স্বাধীনতার আগে ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ দেওয়ার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু তা খারিজ হয়ে গিয়েছিল।'
অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই দেশে সরব হতে শোনা গিয়েছে একাধিক বিজেপি নেতাকে। এরই মধ্যে বিজেপি শাসিত বিভিন্ন রাজ্যেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে তোড়জোড় করতে দেখা গিয়েছে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলিকে। কয়েকমাস আগে অনুষ্ঠিত লোকসভা নির্বাচনের আগেও নিজেদের ইস্তেহারে বিজেপি স্পষ্ট করে দেয়, ২০২৪ সালের ভোটে জিতলে দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করবে মোদী ৩.০ সরকার।
এদিকে চলতি বছরের স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতাতেও অভিন্ন দেওয়ানি বিধির পক্ষে সওয়াল করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছিলেন, 'যে আইন ধর্মের ভিত্তিতে দেশকে বিভাজিত করে, যে আইন উচ্চ বর্ণ, নিম্ন বর্ণের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে, আধুনিক সমাজে সেই আইনের কোনও জায়গা নেই। আমরা একটা সাম্প্রদায়িক দেওয়ানি বিধিতে ৭৫ বছর কাটিয়েছি। এবার একটা ধর্মনিরপেক্ষ দেওয়ানি বিধি চালু হওয়া দরকার। তাহলে মানুষে মানুষে বিভেদ কমবে।'