পলাতক ব্যবসায়ী বিজয় মালিয়া ভারতে আসার কথা বিবেচনা করতে পারেন। তবে এর জন্য তাঁর পক্ষ থেকে সরকারের কাছে একটি শর্ত রাখা হয়েছে। সম্প্রতি, মালিয়া একটি পডকাস্টে হাজির হয়েছিলেন যেখানে তিনি জালিয়াতির অভিযোগ, 'পলাতক' ট্যাগ সহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলেছিলেন। ২০১৬ সালে তিনি ভারত থেকে পালিয়ে যান। বর্তমানে তাঁকে ভারতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। এই আবহে বিজয়কে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আপনি কি আর ভারতে ফিরবেন? (আরও পড়ুন: অপারেশন ব্লু স্টারের ৪০ বছর পূর্তিতে অমৃতসর বনধের ডাক, সাহস বেড়েছ খলিস্তানিদের!)
আরও পড়ুন: মহুয়াকে বিয়ের শুভেচ্ছা অভিষেকের, কী বললেন তৃণমূল সেনাপতি?
রাজ শ্যামানির পডকাস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মালিয়াকে প্রশ্ন করা হয়, সুষ্ঠু বিচার হলে তিনি ভারতে আসতে চান কিনা। জবাবে তিনি বলেন, 'যদি আমাকে আশ্বস্ত করা হয়, তাহলে আমি অবশ্যই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করব।' তাঁকে 'চোর' বলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজয় মালিয়া। তিনি বলেন, '২০১৬ সালের মার্চের পর ভারতে না যাওয়ার জন্য আমাকে পলাতক বলা হয়। কিন্তু আমি পালিয়ে যাইনি। পূর্ব পরিকল্পিত সফরে ভারত ছেড়েছিলাম। আমার কাছে সেই সফর বৈধ বলে মনে হয়। এমতাবস্থায় যদি আমাকে পলাতক বলতে চান, তাহলে বলুন। কিন্তু চোর মানে কী?' (আরও পড়ুন: 'আমি না থাকলে ট্রাম্প জিততেন না', বন্ধুত্বে ফালট ধরতেই মিসাইল নিক্ষেপ মাস্কের)
চলতি বছরের এপ্রিলে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (এসবিআই) নেতৃত্বে ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলির একটি কনসোর্টিয়াম লন্ডনের একটি আদালতে পলাতক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে দেউলিয়া প্রক্রিয়া শুরু করার আদেশ বহাল রাখার আবেদনে জিতেছিল। দীর্ঘদিন ধরেই এই নিয়ে আইনি লড়াই চলছে। সেখানে মালিয়ার অধুনালুপ্ত কিংফিশার এয়ারলাইন্সকে বকেয়া ঋণ পরিশোধের দাবি জানিয়ে আসছে এসবিআই। এই আবহে লন্ডন হাইকোর্টের বিচারক অ্যান্থনি মান ৬৯ বছর বয়সি ব্যবসায়ী বিজয় মালিয়ার আপিলের অনুমতি চেয়ে দুটি আবেদন খারিজ করে দেন এবং ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলোর পক্ষে রায় দিয়েছেন।
এর আগে সংসদে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন দাবি করেছিলেন, বিজয় মালিয়ার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে করে ১৪,১৩১.৬ কোটি টাকা বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে ফিরিয়েছে ইডি। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিজয় মালিয়া দাবি করেন, তাঁর সংস্থা কিংফিশার এয়ারলাইন্সের যত টাকা বকেয়া ছিল, তার থেকে বেশি টাকা ইডি বাজেয়াপ্ত করেছে।
উল্লেখ্য, কিংফিশার এয়ারলাইন্স ঋণ জালিয়াতির মামলায় অভিযুক্ত বিজয় মালিয়া। বিগত বছরগুলিতে বিজয় মালিয়াকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা করে গিয়েছে ভারত সরকার। তবে তিনি আপাতত লন্ডনে জীবনযাপন করছেন। উল্লেখ্য, বিজয় মালিয়া এক সময় ভারতের অন্যতম সফল ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কিংফিশার এয়ারলাইন্সের পাশাপাশি ইউনাইটেড স্পিরিট নামক মদ প্রস্তুতকারী সংস্থা চালাতেন তিনি। আইপিএল-এ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু দল কিনেছিলেন। ভারতীয় ফুটবলের বহু দলেও তাঁর বিনিয়োগ ছিল। পরে ফর্মুলা ওয়ানেও একটি দল কিনেছিলেন বিজয়। তবে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যাঙ্কগুলি থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ না করার অভিযোগ ছিল। এই আবহে মালিয়ার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত চলছে।