সংসদে চত্বরে অব্যাহত ব্যাগ বিতর্ক! যার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন প্রথমবারের সাংসদ তথা কেরালা ওয়েনাডের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা। একেবারে শুরু থেকেই নানা কারণে সকলের নজর কাড়ছেন তিনি।
গত সোমবার যেমন প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়। তার কারণ, তিনি কাঁধে যে রংচঙে ঢাউস ব্যাগটি ঝুলিয়ে সংসদে এসেছিলেন, সেটি ছিল আদতে প্যালেস্তাইনের যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষের প্রতি তাঁর পাশে থাকার এবং যুদ্ধ বন্ধ করার বার্তা। সেই ব্যাগে গোটা গোটা অক্ষরে ইংরেজি হরফে লেখা ছিল 'প্যালেস্তাইন'! সঙ্গে সহমর্মিতা ও শান্তির প্রতীক হিসাবে আঁকা ছিল - এক ফালি তরমুজ এবং একটি উড়ন্ত সাদা পায়রা (অথবা সাদা ঘুঘু)।
এর পরের দিন প্রিয়াঙ্কার কাঁধে ঝুলতে দেখা যায় আরও একটি ব্যাগ। দেখতে অনেকটা আগের দিনের মতো হলেও এই ব্যাগের বার্তা ছিল আলাদা। তাতে হিন্দিতে যা লেখা ছিল, তার অর্থ হল - বাংলাদেশের আক্রান্ত ও নিপীড়িত হিন্দুদের পাশে সকলকে দাঁড়াতে হবে। প্রসঙ্গত, এর আগে প্রিয়াঙ্কা লোকসভায় বাংলাদেশ ইস্যুতে মোদী সরকারের হস্তক্ষেপও দাবি করেছেন।
কংগ্রেসের তরফে প্রিয়াঙ্কার এহেন আচরণের ভূয়সী প্রশংসা করা হলেও বিজেপি ছিল বেজায় খাপ্পা। তাঁদের সাংসদরা বলছিলেন, আসলে প্রিয়াঙ্কা স্রেফ খবরে থাকার জন্য এসব করছেন! যদিও সেকথা খুব একটা ভুল নয়। কারণ, প্রিয়াঙ্কার এই ব্য়াগ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে ভালোই খবর হয়েছে। দেদার প্রচার হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়।
আর এবার সেই খবর বা প্রচারে যোগ দিলেন বিজেপিরই সাংসদ অপরাজিতা সারাঙ্গি। শুক্রবার তিনি সংসদ চত্বরেই প্রিয়াঙ্কাকে একই ধরনের একটি ব্যাগ উপহার দেন। তার গায়ে লাল রঙে ইংরেজিতে লেখা ছিল শুধু একটি সাল - ১৯৮৪! চারটি সংখ্যা থেকেই লাল রং অনেকটা রক্তের মতো নীচের দিকে নেমে এসেছে!
প্রসঙ্গত, এই ১৯৮৪ সালের সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে শিখবিরোধী দাঙ্গার ইতিহাস। যার ঠিক আগেই দেহরক্ষীর হাতে খুন হতে হয়েছিল ভারতের প্রাক্তন এবং একমাত্র মহিলা প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে। যিনি কিনা সম্পর্কে প্রিয়াঙ্কার ঠাকুমা। অর্থাৎ, প্রিয়াঙ্কার কাছে ১৯৮৪ সালের স্মৃতি একান্তই ব্যক্তিগত এবং অত্যন্ত বেদনার।
তবে, এদিন যখন বিজেপি সাংসদ তাঁকে ওই ব্যাগটি উপহার দিতে এগিয়ে আসেন, প্রিয়াঙ্কা হাসিমুখেই তা গ্রহণ করেন!
উল্লেখ্য, এর আগে যখন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা প্রিয়াঙ্কাকে ব্য়াগ বিতর্ক নিয়ে প্রশ্ন করলে, তিনি বলেন - কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত বাংলাদেশের আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো।