আরজি করের নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে দু-মাস পরও উত্তাল শহর। দুর্গাপুজোর আহবে অনেকে উৎসবমুখী, তবুও ফিকে হয়নি বিচারের দাবি। ধর্মতলায় নির্যাতিতার সহকর্মী জুনিয়র চিকিৎসকরা আমরণ অনশনে। মেয়ে চলে গেছে, উৎসবের মরসুমেও তাই ওই তরুণী চিকিৎসকের বাড়িতে আঁধার। ঘটা করে বাড়িতে দুর্গাপুজোর আয়োজন করতেন ওই তরুণী।
সামনেই ছিল বিয়ে। এটাই বাড়ির মেয়ে হিসাবে শেষ দুর্গাপুজো ছিল তাঁর। কিন্তু তার আগে সব শেষ হয়ে যাবে কে জানতো? বাড়ির পুজো আজীবনের মতো বন্ধ করেছেন তাঁর বাবা-মা। এই কষ্টের সময়ে তাঁদের সঙ্গে সমব্যাথী হাজার হাজার মানুষ। নবমীর দিন নির্যাতিতার বাবা-মা'র সঙ্গে কিছুটা সময় কাটাতে তাঁদের বাড়িতে হাজির হবেন চৈতি ঘোষাল, দেবলীনা দত্ত, সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়, ঊষসী চক্রবর্তীরা। আনন্দবাজারকে দেবলীনা জানান, ‘মেয়েকে হারিয়েও ওঁরা কত শক্ত! ওঁদের ওই সাহসটাই আনতে যাচ্ছি’। ঊষসীর কথায়, পুজোর একটা দিন অন্যরকম উদযাপনে নির্যাতিতার বাড়ি যাবেন বলে ঠিক করেছিলেন তাঁরা, সেই থেকেই বেছে নিয়েছেন নবমীর দিনটা।
মেয়ের মৃত্যুশোক বুকে চেপেও জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন মৃতার বাবা-মা। ওঁনাদের যন্ত্রণা লাখো মানুষের বুকে প্রতিবাদের আগুন জ্বালিয়েছে। যাঁর বিচারের দাবিতে পথে নামা, তাঁর প্রিয়জনরা এই উৎসবের দিনে কেমন আছেন? স্বচক্ষে তা দেখতেই নবমীতে ছুটে যাবেন চৈতিরা। যদিও পঞ্জিকা মতে পুজো শুক্রবারেই শেষ।
নবমী তিথি পেরিয়ে দশমী পড়ে গিয়েছে। কিন্তু চৈতিদের পুজো এখনই শেষ হচ্ছে না। অভিনেত্রী জানান, ‘আমাদের পঞ্জিকায় পুজো চলবে ন্যায় বিচার না আসা পর্যন্ত।’ জুনিয়র চিকিৎসদকের অনশনকে সমর্থনকে জানিয়ে তিনি বলেন, ওঁদের উদ্দেশ্য ‘থ্রেট কালচার’ বন্ধ করা।
ওদিকে অনশন মঞ্চে আজও অভুক্ত অবস্থায় রয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। অনশনকারী অনিকেত মাহাতোর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গতকালই তাঁকে আরজি কর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, তিনি রয়েছেন আইসিইউ-তে। তববুও বাকিরা দমতে না-রাজ। দাবি না মেটা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন তাঁরা। শরীর ক্রমশ দুর্বল হয়েছে। কিন্তু মনের অদম্য জেদ। মনের জোর আজও অটুট। সেই অবস্থায় মহাঅষ্টমীতে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
এসবের মধ্যেই জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে অনুরোধ করা হয়েছে, রবিবার বাড়িতে বাড়িতে একবেলা অরন্ধন কর্মসূচি পালন করতে পারেন। প্রতিবাদের অঙ্গ হিসাবে ঘরে ঘরে পালিত হোক এই অরন্ধন কর্মসূচি।