বাংলার অন্যতম প্রবাদপ্রতিম শিল্পী হলেন কবীর সুমন। তাঁর কণ্ঠে খেয়াল শুনতে ভালোবাসেন না বা তাঁর গানের ভক্ত নন এমন মানুষ বড়ই কম আছে। তবে সম্প্রতি এ হেন জনপ্রিয় বর্ষীয়ান গায়ক তাঁর একটি সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তিনি সম্প্রতি ফেসবুকের পাতায় একটি পোস্ট করে জানান তাঁর বাকি জীবনটা অর্থাৎ জীবনের শেষ ভাগটা বাংলাদেশেই কাটাতে চান। তিনি ভারতে থাকতে চান না। এমনকি গায়কের অনুরোধ তাঁর মৃত্যুর পর যেন তাঁর দেহ বাংলাদেশে পাঠানো হয়। সেখানকার কোনও হাসপাতালের কাজে যেন তাঁর দেহকে ব্যবহার করা হয়।
ভারতে আর থাকতে চান না কবীর সুমন!
এদিন ফেসবুকের একটি পোস্টে সুমন লেখেন, 'এই কথা আমি আগেও অনেক বার বলেছি। তাও ফের বলছি কারণ আমার কথায় কোনও কাজ হচ্ছে না। এমন নয় যে সনাতনধর্মীয় নামধারী কোনও বঙ্গজ আমায় সম্মান করেন না। মুষ্টিমেয় কিছু বঙ্গজ করেন। কিন্তু বড্ড বেশি সংখ্যক সনাতনধর্মীয় বঙ্গজ আমায় ঢাক পিটিয়ে ঘৃণা করেন, এবং তা জাহির করে সনাতনী সুখ পান।'
আরও পড়ুন: অপেক্ষার অবসান! আসছে টাইগার ভার্সেস পাঠান, কবে থেকে শ্যুট শুরু করছেন শাহরুখ-সলমন?
আরও পড়ুন: AI-এর সাহায্যে তেলেগু ছবিতে প্রয়াত এসপি বালাসুব্রমণিয়ামের কণ্ঠে গান! নির্মাতাদের আইনি নোটিশ পরিবারের
তিনি এদিন আরও লেখেন, 'আর এক শ্রেণীর সনাতন-বঙ্গজ আছে যারা আমায় কবীর নামে ডাকতে চায় না। এরা, যা দেখেছি বামপন্থী। ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে আমার নাম ভারতের সংবিধান মোতাবেক, ঘোষিতভাবে কবীর সুমন। ফার্স্ট নেম কবীর। সার্নেম সুমন। আমার আয়কর ফাইল, র্যাশন কার্ড, পাসপোর্ট, ভোটার আইডি, আধার কার্ড সর্বত্র এই নামটাই আছে। এই নামে আমি ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে লড়ে মাননীয় সিপিআইএম সদস্য ডক্টর সুজন চক্রবর্তীকে হারিয়ে দিয়ে লোকসভার সাংসদ হয়েছিলাম। ভারতের অন্তর্ভুক্ত পশ্চিমবাংলায় তা সকলের জানার কথা। তা সত্ত্বেও সিপিআইএম করা বঙ্গজরা আমায় আমার বর্জিত নামে ডাকেন। শুধরে দিলেও শুধরে নেন না। আর নকশালপন্থী দলের বঙ্গজ নেতাও (নামে সনাতনধর্মীয়) আমায় ভুলেও কবীর সুমন বলেন না, কবীর তো নয়ই। তিনি অবিরাম সুমন সুমন করে যান। এদিকে সকলেই নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার, ব্যক্তিগত অধিকার বলতে গদগদ।'
তাঁর দাবি তাঁকে যাঁরা ভালোবাসেন, শ্রদ্ধা করে তাঁরা সকলেই বাংলাদেশী। তাই এদিন তিনি লেখেন, 'আর একদল আছে, যারা আমায় গানওলা বলে ডাকে। কী বলি। যা বুঝেছি, আমায় নির্দ্বিধায় সম্মান করেন যাঁরা, প্রাপ্য সম্মানটুকু দেন যাঁরা তাঁরা সদলবলে বাংলাদেশের নাগরিক। পশ্চিমবঙ্গের সনাতনধর্মীয় বঙ্গজদের মতো বাংলাদেশের কেউ আমায় সমানে যে কোনও উপায়ে অপমান করে যান না।'
পরিশেষে তিনি ইচ্ছে প্রকাশ করে লেখেন, 'আমার শেষ জীবন আমি যদি বাংলাদেশে থেকে আমার মাভাষার সেবা করতে পারতাম, বাংলা খেয়াল শেখাতে পারতাম আমার আজকের স্বাস্থ্য যতটা অনুমতি দেবে ততটা অন্তত। মরে যাবার পর কোনও ধর্মীয় শেষকৃত্যের প্রশ্নই উঠবে না আমার। আমার দেহ দান করা আছে। বাংলাদেশে মরলে সেখানকার কোনও হাসপাতালে আমার শরীর কাজে লাগানো যেতে পারে।'
আরও পড়ুন: গুরুতর অসুস্থ মনোজ মিত্র, সার্জারির পর কেমন আছেন বিখ্যাত নাট্যকার?