কর্মসূত্রে এখন কলকাতায় থাকলেও, মনে প্রাণে আজও লিলুয়ার মেয়ে ইমন চক্রবর্তী। তাই কেরিয়ারে যতই উন্নতি করুন না কেন, মায়ের দেখানো পথে প্রতি বছর লিলুয়ায় করতেন ‘বসন্ত উৎসব’। তবে এ বছর লিলুয়ায় আর সেই বসন্ত উৎসব পালন করবে না বলে জানিয়েছিলেন গায়িকা। কেন তা করবেন না সে কারণও প্রকাশ্যে এনেছিলেন তখনই। তবে এবার খবর তিনি কলকাতায় এ রকমই একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে চলেছেন।
রবিবার সামজমাধ্যমের পাতায় গায়িকা জানান, মার্চের ২২ এবং ২৩ তারিখ নজরুল মঞ্চে একটি অপেরা শোয়ের আয়োজন করছেন, তার নাম ‘তোমায় দেখব বলে’। কিন্তু বসন্ত উৎসবের বিকল্প হিসেবেই কি এই অপেরার আয়োজন? সেই প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘অন্য আবেগ থেকে লিলুয়াবাসীদের জন্য ‘বসন্ত উৎসব’-এর আয়োজন করতাম। সেই আবেগের সঙ্গে অপেরার কোনও যোগ নেই। ওই অনুভূতিও অন্য কোনও অনুষ্ঠান দিয়ে পূরণ হওয়ার নয়।’
তবে ইমনের বসন্ত উৎসবে একরাশ তারকা শিল্পী মঞ্চ মাতাতেন। কিন্তু এই অপেরা শো কেবল কথায় নয় কাজেও বসন্ত উৎসবের থেকে অনেকটা আলাদা। শিল্পী জানান, এই বিশেষ অনুষ্ঠানে তিনি এবং তাঁর ছাত্র-ছাত্রীরা অংশ নেবেন। তবে বিদেশের অপেরা যে রকম তারকাখচিত হয় না। তেমনই হবে তাঁর অনুষ্ঠানও। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সেই জায়গা থেকে অন্য কোনও খ্যাতনামা শিল্পী অপেরায় থাকবেন না। একই ভাবে জনপ্রিয় শিল্পী ইমন চক্রবর্তী নন, শিল্প-সংস্কৃতির পূজারি ইমন অপেরায় অংশ নেবেন।’
তবে অপেরা মানে শুধু গান নয়, থাকে নাচ ও অভিনয়। তাঁর অনুষ্ঠানেও সেই স্বাদ পুরো মাত্রায় রাখার জন্য তিনি তাঁর শিক্ষার্থীদের নিয়ে জোর অনুশীলন করছেন। জানিয়েছেন, সংলাপ দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হবে। সেই সংলাপের সূত্র ধরেই আসবে গান। তবে তাঁর এই নতুন প্রচেষ্ঠায় নানা ভাবে পাশে থাকছেন নীলাঞ্জন। দর্শক-শ্রোতাদের যে তাঁর এই নতুন নিবেদন ভালো লাগবে তা নিয়ে আশাবাদী ইমন।
আরও পড়ুন: রূপকথার মতো সুন্দর! ১৩ বছর প্রেম, বিয়ে করলেন বাংলাদেশের মেহজাবিন, কী করেন পাত্র?
প্রসঙ্গত, বসন্ত উৎসব না হওয়া প্রসঙ্গে জানুয়ারি মাসে সমাজমাধ্যমের পাতায় নানা কথা অনুরাগীদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিলেন গায়িকা। তিনি লিখেছিলেন, ‘এই বছর লিলুয়াতে বসন্ত উৎসব হচ্ছে না। কারণ হিসাবে জানাতে চাই গত ৮ বছর ধরে আমরা লিলুয়াতে উৎসবটা করছিলাম। কিন্তু কিছু স্থানীয় মানুষজন প্রত্যেক বছর অনুষ্ঠানের শেষের দিকে এসে ঝামেলা করে গিয়েছেন। বেশকিছু শিল্পীর সঙ্গে অভব্য আচরণ করেছেন, আমরা এটা ডিসার্ব করি না। এখানে যাঁরা খেটে অনুষ্ঠানটা দাঁড় করান, তাঁরা একটি টাকাও নেন না। শিল্পীরাও নেন না। আমরা এটা লিলুয়ার মানুষদের জন্য করতাম। আমার মায়ের স্মৃতির উদ্দেশ্যে করতাম। অনেক কষ্ট নিয়ে লিলুয়াতে এই অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছি। জানি এতে অনেকে খুশি হবেন। তবে এটাও জানি যে কষ্ট পাবেন তাঁর থেকে বেশি সংখ্যক মানুষ। আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। তবে এটাও জানিয়ে দিচ্ছি আমরা ফিরব, আরও বড় করে ফিরব।’