ছোটপর্দার নামী নায়িকা অন্বেষা হাজরা। এখন জিবাংলার পর্দায় দর্শক তাঁকে দেখছে আনন্দী হিসাবে। দেবকে ভালোবেসেই উচ্চমাধ্যমিকে ভালো ফল করেন অন্বেষা। স্বপ্ন ছিল কলকাতায় এসে দেবকে বিয়ে করবেন! বাস্তবে হোক বা পর্দায়, সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তবে এবার দেবের প্রতিদ্বন্দ্বী তিনি। শুক্রবার বক্স অফিসে মুক্তি পেল অন্বেষা অভিনীত ৫ নম্বর স্বপ্নময় লেন। আরও পড়ুন-চরম অর্থকষ্টে সুপ্রকাশ চাকী! শিল্পীর দুরাবস্থায় ফের 'মমতাময়ী' মুখ্যমন্ত্রী,১ লাখ অনুদান মন্ত্রীর
মানসী সিনহা পরিচালিত এই ছবিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে ছোটপর্দার এই সুন্দরী। ছবি মুক্তির দিনও আনন্দীর সেটে, নিজের কমিটমেন্ট পূরণে ব্যস্ত। শট দেওয়ার ফাঁকেই হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার সঙ্গে আড্ডা দিলেন নায়িকা।
এই ছবি আপনার ডেবিউ ফিল্ম না হলেও, নতুন ইনিংস শুরু বলা যায়। তাই তো? নার্ভাস লাগছে?
অন্বেষা: হ্যাঁ, এই প্রথমবার লিড চরিত্রে কাজ করা। তবে বিশ্বাস করুন, আমি একফোঁটা নার্ভাস নই, আমি কোনওকালেই ছিলাম না। আমি সিরিয়াল শুরুর আগেও নার্ভাস থাকি না। প্রত্যেকে ছবি বানায় দর্শককে এন্টারটেন করার জন্য, আনন্দ দেওয়ার জন্য় সেখানে তো নার্ভাস হওয়ার প্রশ্নই নেই। প্রিমিয়ারে আমরা সবাই খুব ভালো রেসপন্স পেয়েছে। আজ সকাল থেকেও ভালো প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি সব জায়গা থেকে।
কী মনে হচ্ছে পরীক্ষায় পাশ করে গেলেন?
অন্বেষা: এই ছবির সুবাদে অনেক শিল্পীর সঙ্গে আলাপ হল, যাঁদের আমি দূর থেকে দেখেছি, কোনওদিনভাবি তাঁরা আমার কাজ দেখবেন। প্রশংসা করবেন। কোথাউ গিয়ে মনে হচ্ছে মানসীদি যে দায়িত্বটা আমাকে দিয়েছিল, সেটা আমি পূরণ করতে পেরেছি। বলতে পারেন পাশ করে গেছি। তাই ভালো লাগছে।
ছবির পরিচালক, মানসী সিনহা তো আপনার ‘ছোট ঠাম্মি’। এই পথ যদি না সেট থেকেই দারুণ বন্ডিং। নতুন ভূমিকায় কতটা নতুন করে পেলেন তাঁকে?
অন্বেষা: ওঁনাকে আমি ছোট ঠাম্মি হিসাবে কতটা আপন করতে পেরেছি বা ভালোবাসতে পেরেছি জানি না, কিন্তু উনি আমাকে অগাধ ভালোবেসেছেন। আমার উপর প্রথম থেকেই ভরসা করেছিলেন। ওঁনাকে পরিচালক হিসাবে প্রথম দেখলাম ৫ নম্বর স্বপ্নময় লেনে, তবে ওঁনার প্রথম ছবি পর্দা দেখেছি। সিরিয়ালের সেটের একটা ঘটনা বলি, আমার চরিত্রটা ছোট থেকে একটা ট্রমায় ভোগে। সুতরাং সেটা আমার কাছে নতুন ভয় নয়, ক্যামেরার সামনে সেই ভয়টা যখন ব্যক্ত করব সেটা কীভাবে করব মানসী সাজেশন দিয়েছিলেন। আমি মন দিয়ে সবার কথা শুনি। উনি ছোটদের গাইড করেন বরাবর। মানসীদির প্রতি সম্মানটা সেদিন আরও বেড়ে গিয়েছিল। আর ওঁনাকে তো মনিটরে আমি হাঁ করে গিলতাম। উনি খুব ন্যাচরাল ডিরেক্টর। নিজের দূরদর্শিতা রয়েছে, তবে অভিনেতাকেও খোলা ময়দান দেন পারফর্ম করার।

অন্য ভাষার ছবির সঙ্গে লড়াই, সঙ্গে বিগ বাজেট খাদান, সন্তানের ভিড়ে আপনাদের ছবির হল সংখ্যা কম। প্রতিযোগিতা অসম মনে হচ্ছে?
অন্বেষা: বাজেট বা হল লিস্ট সে-সব বোঝার জন্য একটা গোটা টিম আছে। প্রিমিয়ারেও আমি বলেছি, আমরা ছোট ছোট কাজ করেছি, তবে আমাদের মনটা বড়। আমরা ৫২টা হল পেয়েছি, কেউ ১৪০টা হল পেয়েছে। আবার কেউ হয়ত আমাদের চেয়েও কম হল পেয়েছে। সেটা নিয়ে আমাদের যিনি ডিস্ট্রিবিউটর ওঁনার মাথাব্যাথা অনেক বেশি। আমি শুধু এইটুকুই বলব, যাদের ছবি একদিন পর্দায় দেখতাম, ভাবতাম তাঁদের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করব। তাদের সঙ্গেই এক হলে আমার ছবি রিলিজ করছে, সেটাই বড় ব্যাপার।
দেব তো আপনার ক্রাশ। তাঁর খাদান ঘিরে রীতিমতো হইচই। কী বলবেন?
অন্বেষা: দেবের খাদান খুব ভালো চলুক। সবাই তো চায়, নিজের মুভি হলে চলুক। দেবদার ছবিও খুব ভালো করুক। দেব আমার ছোটবেলার পাগলামো, বড় হওয়ার সাথে সাথে সেই পাগলামো কেটে গেছে। আমি নিজের মুখেই সেই পাগলামিরকথা বলেছি জি বাংলার বর্ষবরণে গিয়ে। দেবকে আমরা অস্বীকার করতে পারি না। দেব সুপারস্টার। আমার কী পাগলামি ছিল, আমার বন্ধুরা দেবকে নিয়ে আরও পাগল ছিল স্কুলে। ওই যে দেব, এবং সন্তানের শুভশ্রী তাঁদের জুটিকে দেখে আমার একটা সময় ইচ্ছে করেছিল এই পর্দাটায় কাজ করতে। আজ দেব আলাদা কাজ করছে, শুভশ্রী আলাদা কাজ করছে। ওদের মাঝে আমার কাজটাও আছে, সেটাই আমার কাছে বড় পাওয়া।
ছোটপর্দার নায়িকারা এখন বড় স্টার, সন্তানে অহনা, খাদানে ইধিকা আর আপনার ছবি একইদিনে হলে। ভালো লাগছে?
অন্বেষা: আমি স্টার নই, আমি টেলিভিশনে কাজ করেছি। আমি একজন শিল্পী। আমার মাধ্যম নিয়ে বাদ-বিচার নেই। ভালো চরিত্র হলে আমি ওয়েবেও কাজ করব। এটা আমার কপাল যে আমি ভালো কাজ পেয়েছি। আগে বড়পর্দায় আমার কাছে এমন ভালো সুযোগ আসেনি। আমি সত্যি লাকি। আমি কিন্তু ছোটপর্দায় কাজ করেছি বলে আমার কোনও দুঃখ নেই। বরাবর বিশ্বাস করি, টেলিভিশনে কাজ করা অনেক বেশি কঠিন। অহনার সন্তানের অভিনয়ের কথা যখন প্রথম প্রকাশ্যে আসে, আমি ওকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলাম। অহনা খুব ভালো কাজ করে। ইধিকাও খুব ভালো অভিনয় করে। ওঁদের জন্য আমার অফুরান শুভেচ্ছা।