৬ রানে চেন্নাই সুপার কিংসকে হারিয়ে আইপিএলে জয়ের মুখ দেখল রাজস্থান রয়্যালস। শেষ ওভারে মাস্টার স্ট্রোক দিলেন রাজস্থান অধিনায়ক রিয়ান পরাগ। তিনি আর্চারকে বোলিং না দিয়ে শেষ ওভার করতে দেন সন্দীপ শর্মাকে। ১৯ রান ডিফেন্ড করতে নেমে ৬ রানে রাজস্থানকে জেতালেন সন্দীপ। দুরন্ত বোলিং করে চার উইকেট হাসারাঙ্গার।
গুয়াহাটিতে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন চেন্নাই সুপার কিংসের অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড়। শুরুতে রাজস্থানকে ধাক্কাও দেয় সিএসকে। যশস্বী জসওয়ালকে তৃতীয় বলেই সাজঘরে ফেরান খলিল আহমেদ। চার মেরে যশস্বীকে দেখে আত্মবিশ্বাসী লাগলেও তিনি ৪ রানেই ফিরলেন সাজঘরে। এরপর ১৬ বলে ২০ রানের ইনিংস খেলেন সঞ্জু স্যামসন। নীতীশ রানা অবশ্য সেকন্ড ডাউনে এসে দুর্ধর্ষ ইনিংস খেলে যান।
৩৬ বলে ৮১ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেন নাইটদের প্রাক্তন অধিনায়ক। এবারের আইপিএলে এটাই নীতীশ রানার সব থেকে বড় ইনিংস। মারলেন ১০টি চার এবং পাঁচটি ছয়। তবে মহেন্দ্র সিং ধোনির তৎপরতা এবং অশ্বিনের বুদ্ধিমত্তায় নীতীশ ফিরলেন স্টাম্প আউট হয়ে। রাজস্থানের অধিনায়ক রিয়ান পরাগ ২৮ বলে করলেন ৩৭ রান। সিমরন হেতমায়ের করলেন ১৬ বলে ১৯ রান। ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৮২ রান করে রাজস্থান রয়্যালস।
দুরন্ত বোলিং আর্চারের
জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারে দুরন্ত বোলিং করলেন জোফ্রা আর্চার। তাতেই খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরলেন ইন ফর্ম ব্যাটার রাচিন রবীন্দ্র। রাহুল ত্রিপাঠি করলেন ১৯ বলে ২৩ রান। শিবম দুবেকে ইম্প্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে আনা হলেও ১০ বলে ১৮ রান করে তিনি সাজঘরে ফিরলেন, যদিও তাঁর আউটের ক্ষেত্রে বিতর্ক রয়েছে। আদৌ রিয়ান পরাগের ক্যাচ বৈধ ছিল কিনা, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলছে অনেকে। বিজয় শঙ্করও ৬ বলে ৯ রানের বেশি করতে পারলেন না।
অর্ধশতরান রুতুরাজের
চেন্নাইকে এরপর টানলেন রুতুরাজ গায়কোয়াড়। এই নিয়ে টানা তিন ম্যাচেই সিএসকের ওপেনিং জুটি ক্লিক করল না। পাওয়ারপ্লের মধ্যে রুতুরাজ নেমে এই ম্যাচেও অর্ধশতরান করে দলকে টানলেন তিনি। ৪৪ বলে ৬৩ রান করে হাসারাঙ্গার বলে শেষ পর্যন্ত আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন সিএসকে অধিনায়ক, আর তারপরই মাঠে নামেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে এদিন অনবদ্য বোলিং করলেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, তার স্পিনের সামনেই কুুপোকাত হয়ে গেল চেন্নাই। রাহুল ত্রিপাঠি, রুতুরাজ গায়কোয়াড়, শিবম দুবে এবং বিজয় শঙ্করকে আউট করলেন তিনি। চার ওভারে ৩৫ রান দিয়ে নিলেন ৪ উইকেট।
শেষ ২ ওভারে লড়লে সিএসকে
শেষ ২ ওভারে বাকি ছিল ৩৯ রান। সেখানে বোলিং করতে আসেন ১৯তম ওভারে তুষার দেশপাণ্ডে। তিনি ১৯ রান দেন, তাতেই ম্যাচ কার্যত চেন্নাইয়ের হাতে চলে যায়। এই ওভারে মহেন্দ্র সিং ধোনি একটি চার এবং একটি ছয় মারেন। এরপর শেষ বলে রবীন্দ্র জাদেজা ছয় মারেন। এখানেই অবাক কাণ্ড ঘটান রিয়ান পরাগ। তিন ওভারে দুরন্ত বোলিং করে মাত্র ১৩ রান দেওয়া জোফ্রা আর্চারকে বোলিং না দিয়ে তিনি বল হাতে তুলে দেন সন্দীপ শর্মা, যিনি তিন ওভারে ৩০ রান দিয়েছিলেন।
শেষ ওভার বোলিং করেন সন্দীপ শর্মা
১১ বলে ১৬ রান করে ওভারের প্রথম বলেই আউট হয়ে যান মহেন্দ্র সিং ধোনি। বড় শট খেলার চেষ্টা করলেও সিমরন হেতমায়েরের হাতে ক্যাচ উঠে যায়। ডিপ মিড উইকেটে দৌড়ে এসে দুরন্ত ক্যাচ নেন হেতমায়ের।
এরপর জেমি ওভার্টন এসে একটি ছয় মারলেন, কিন্তু তাতে লাভের লাভ কিছুই হল না। কারণ শেষদিকে ধোনি এবং জাদেজা ম্যাচ ডিপ পর্যন্ত নিয়ে যেতে গিয়ে কার্যত নিজেদের হাতের নাগালের বাইরে ম্যাচ নিয়ে গেলেন। শেষ পর্যন্ত জাদেজা ২২ বলে ৩২ রান করে নটআউট রইলেন, ম্যাচে সিএসকে ৬ রান দূরে আটকে গেল। টানা ২ ম্যাচে হারের পর জয়ের দেখা পেল রাজস্থান, অন্যদিকে এই নিয়ে টানা দ্বিতীয় হারের দেখা পেল সিএসকে।