কর্মক্ষেত্রে এক অধ্যাপিকাকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল রাজ্যের জাতীয় আইনবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডব্লিউবিএনইউজেএস) উপাচার্য নির্মলকান্তি চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগ থেকে স্বস্তি পেলেন উপাচার্য। কলকাতা হাইকোর্ট তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে। সিঙ্গল বেঞ্চের রায় খারিজ করে সোমবার উপাচার্যকে স্বস্তি দিয়েছে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের বেঞ্চ।
আরও পড়ুন: আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নামে যৌন হেনস্থার অভিযোগ, CJI-কে চিঠি পড়ুয়াদের
২০২৩ সালের এপ্রিলে অধ্যাপিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থানীয় অভিযোগ কমিটির (এলসিসি) কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তবে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে উপাচার্যের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছিল কমিটি। পরে মামলা হয় হাইকোর্টে। বিচারপতি কৌশিক চন্দের একক বেঞ্চ এলসিসি-র রায়কে খারিজ করে উপাচার্যের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল।
তার বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেন উপাচার্য নির্মলকান্তি চক্রবর্তী। সাধারণত কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি (প্রতিরোধ, নিষেধাজ্ঞা ও প্রতিকার) আইনের অধীনে দায়ের করা হয়। তবে ক্ষেত্রে অভিযোগ দায়ের করতে হয় ঘটনার তিন মাসের মধ্যে। তবে এই সময়সীমা তিন মাসের জন্য বাড়ানো যেতে পারে যদি কমিটি সন্তুষ্ট হয়। সেক্ষেত্রে কমিটি যদি মনে করে মহিলাকে অভিযোগ দায়ের করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে তাহলে সেই সময়সীমা বাড়তে পারে। কিন্তু, অধ্যাপিকা সর্বাধিক সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরে অভিযোগ করেছিলেন। সেক্ষেত্রে কেন দেরি হয়েছে তার উপযুক্ত কারণ দেখাতে পারেননি তিনি। ফলে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়নি কমিটি।
পরে বিচারপতি কৌশিক চন্দ কমিটির সেই সিদ্ধান্ত খারিজ করে দেন এবং তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলাটি ডিভিশন বেঞ্চে গেলে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে খারিজ করে জানানো হয়, যে অভিযোগটি বিধিবদ্ধ সময়সীমার চেয়ে অনেক পরে দায়ের করা হয়েছিল। ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, ‘যেহেতু যৌন হয়রানির অভিযোগ অনুযায়ী শেষ ঘটনাটি ঘটেছিল ২০২৩ সালের এপ্রিলে। কিন্তু, অভিযোগটি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে দায়ের করা হয়েছিল। যা নির্দিষ্ট সময়সীমার অনেক বেশি।’ যদিও অধ্যাপিকার আইনজীবীর বক্তব্য, উপাচার্য কর্মক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করছিলেন এবং বিভিন্ন সময়ে হুমকিও দিয়েছেন। যার ফলে অভিযোগকারিণী মানসিক ও শারীরিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়েছিলেন। তাই অভিযোগ জানাতে দেরি হয়েছিল। তবে সেই যুক্তি গ্রহণযোগ্য হয়নি ডিভিশন বেঞ্চের কাছে। আদালতের মতে, উপাচার্যের প্রভাব খাটানোর সুযোগ কম। সব পক্ষের বক্তব্য খতিয়ে দেখার পর সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে খারিজ করে দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।