রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনে ভোট শতাংশ ধরে রাখলেও আশানুরূপ ফল হয়নি বিজেপির। তার পর থেকেই রাজ্যে মুসলিম ভোট পাওয়ার আশা ছেড়ে হিন্দুভোটের মেরুকরণে নেমেছেন বিজেপি নেতারা। সন্দেশখালির সভা থেকে সরাসরি সেকথা বলেই দিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন তিনি বলেন, ‘মুসলিম এলাকায় আমাদের ব্যাপার ট্যাপার নাই কিছু। সোজা কথা সোজা বলা ভালো।’ শুভেন্দু অধিকারীর এই ঘোষণার প্রভাব ভোটবাক্সে কী ভাবে পড়তে পারে তা নিয়ে নানা মুনির নানা মত।
এদিন সন্দেশখালির ত্রিমণি বাজারে সভা শেষে শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘আগামীকাল কল্পতরু উৎসব। আমাদের তো দেওয়ার কিছু নেই। আমি ৫ হাজার শীতবস্ত্র দিয়ে গেলাম শুভঙ্কর, রেখা পাত্রকে। আগামীকাল ২৮টা শক্তিকেন্দ্রে ঠাকুর রামকৃষ্ণদেবের ছবি টাঙিয়ে শীতবস্ত্র বিতরণ হবে। প্রান্তিক মানুষরা এটাকে দান হিসাবে নয়, উপহার হিসাবে নেবেন। ২৮টা শক্তিকেন্দ্র সন্দেশখালিতে এই কর্মসূচি একযোগে সকাল ১১টার সময় হবে। ২৮টা শক্তিকেন্দ্র মনে হিন্দুপ্রধান শক্তিকেন্দ্র। মুসলিম এলাকায় আমাদের ব্যাপার ট্যাপার নাই কিছু। সোজা কথা সোজা বলা ভালো। তুমি আমার আর আমি তোমার। ভোট নাই তো আমিও নাই।’
তবে গত বছর এই সময় লোকসভা ভোটের দামামা যখন বেজে গিয়েছে তখন রাজ্যে বিজেপির রণকৌশল ছিল সম্পূর্ণ অন্যরকম। তখন প্রতিটি সভায় বিজেপি রাষ্ট্রবাদী মুসলিমদের সাথে রয়েছেন বলে উল্লেখ করতেন। বহু সভায় বা মিছিলে শুভেন্দু অধিকারীর ঠিক পাশে ধর্মীয় পোশাক পরা মুসলিম যুবকদের দেখা যেত। কিন্তু লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশ হলে দেখা যায় মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক পুরোপুরি গিয়েছে তৃণমূলের বাক্সে। মুসলিম অধ্যুষিত বুথগুলিতে বিজেপি প্রার্থীরা হাতে গোনা ভোটে পেয়েছেন। যার ফলে বিজেপির ভোট শতাংশ গত বিধানসভা নির্বাচনের থেকে লোকসভা ভোটে প্রায় সমান থাকলেও কমে গিয়েছে বিজেপির আসন।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে এর পরই মুসলিম ভোট পাওয়ার আশা ছেড়ে হিন্দু ভোট মেরুকরণে জোর দিয়েছে রাজ্য বিজেপি। লোকসভা ভোটের ফলের পরে যে মুসলিমদের পাশে বিজেপি নেই তা বার বার নানা মন্তব্যে স্পষ্ট করে দিয়েছেন শুভেন্দুবাবুরা। বলেছেন, মুসলিমরা মোদীজির দেওয়া চাল, ঘর, টিকা নেবেন কিন্তু ভোট দেবেন তৃণমূলকে। এবার সরাসরি মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় বিজেপির কোনও ‘ব্যাপার নেই’ বলে জানিয়ে দিলেন শুভেন্দু।